মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন একটি বিবৃতি দিয়েছেন যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তিনি ইরানের বিরুদ্ধে চলমান সামরিক পদক্ষেপের প্রতি তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে জোর দিয়ে বলেন, ‘এই সংঘাতে তেহরান একা নয়।’
কিম জং-উন তার সরকারি ভাষণে ঘোষণা করেন, ‘এই যুদ্ধে ইরান একা নয়। উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীকে যুদ্ধ প্রস্তুতির সর্বোচ্চ স্তরে নিয়ে আসা হয়েছে। কঠিন সময়ে আমরা আমাদের মিত্রদের ত্যাগ করি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ইরানকে সম্পূর্ণরূপে সমর্থন করি। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক আগ্রাসন এবং চাপ প্রয়োগের নীতি আমাদের জানা। কিন্তু আমরা আমাদের বন্ধুদের পাশে দাঁড়িয়ে আছি।
এছাড়া, ইরানের ওপর ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলাকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির সরকারি বার্তা সংস্থা কেসিসিএনএ এক প্রতিবেদনে জানায়, এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি করছে।
উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ইসরায়েলের এ ধরনের আচরণ ইরানের সার্বভৌমত্বের গুরুতর লঙ্ঘন এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।
এতে আরও বলা হয়, বিশ্ব আজ যে গুরুতর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তা স্পষ্ট করে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা শক্তিগুলোর পৃষ্ঠপোষকতায় ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ক্যান্সারের মতো এক সত্তা এবং বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রধান হুমকি।
তাছাড়া, এই নেতা ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক অবকাঠামোর উপর ইসরায়েলের বিমান হামলার বিশেষভাবে নিন্দা করেন। তার মতে, এই আগ্রাসন কেবল ইরান নয়, সমগ্র অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্যও বিপন্ন।
কিম জং-উন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পেরও কঠোর সমালোচনা করেছেন। তার মতে, ওয়াশিংটনের সাম্প্রতিক সময়ের বাস্তবায়িত নীতিগুলো কেবল সহিংসতা বৃদ্ধি করে এবং কূটনীতির দরজা বন্ধ করে দেয়।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, কিম জং-উনের বিবৃতি এই অঞ্চলে ভূ-রাজনৈতিক জটিলতা আরও তীব্র করতে পারে।
এদিকে, ইরান এই বিবৃতিকে স্বাগত জানিয়ে উল্লেখ করেছে যে, তার আন্তর্জাতিক মিত্রদের সংখ্যা বাড়ছে।
শত শত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এবং অসংখ্য হতাহতের সাথে ইরান-ইসরায়েল সংঘাত তীব্রতর হওয়ার সাথে সাথে, এই বিবৃতি বিশ্ব রাজনৈতিক মঞ্চে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে। উত্তর কোরিয়ার এই অবস্থান নতুন ভূ-কৌশলগত জোট গঠনের সম্ভাবনার দিকে ইঙ্গিত করছে।