উত্তরাঞ্চলের অন্যতম খাদ্য উদ্বৃত্ত জেলা বগুড়ায় গত বছরের তুলনায় এ বছর চালের বাজার চড়া। খুচরা বাজারে মধ্যম মানের চালের দর প্রতি কেজিতে এলাকা ভেদে বেড়েছে ৭ থেকে ৮ টাকা। আর চিকন চাল কেজিতে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বর্তমানে মধ্যম মানের চাল ৬০ টাকা ও চিকন চাল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি। দেশে কয়েক হাজার হাসকিং মিল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চালের বাজার এখন অটোরাইস মিলগুলোর নিয়ন্ত্রণে। এ কারণেই চালের দাম বাড়ছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের দাবি।
বগুড়া জেলা চাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শাহ মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, বাজার এখন অটোরাইস মিলগুলোর নিয়ন্ত্রণে। এ অবস্থা থেকে ফিরতে হলে বন্ধ হাসকিং মিলগুলো চালুর ব্যবস্থা করতে হবে। ধানের বাজার ও চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে ছোট ছোট ব্যবসায়ী এবং চাষিদের ধানের মজুত নিশ্চিত করার সুযোগ দিতে হবে। সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে দর বেঁধে দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, গত সপ্তাহে চালের দাম কিছুটা বাড়লেও আগামীতে আর বাড়ার আশঙ্কা নেই। ইতোমধ্যেই ধান কাটা শুরু হয়েছে। আর কিছু দিনের মধ্যে বাজারে ধানের সরবরাহ বাড়বে। তখন ধান ও চালের দর কমবে, এটাই স্বাভাবিক নিয়ম।
খাদ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বলা হয়েছে এখন দেশে অটো রাইস মিল চালু রয়েছে ১ হাজার ৯০৯টি। আর প্রায় ২১ হাজার হাসকিং মিলের মধ্যে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে বন্ধ হয়ে গেছে অর্ধেকই। দুপচাঁচিয়া উপজেলার ছোট একটি ইউনিয়ন তালোড়ায় আটোরাইস মিল আছে ৭টি। ১৭৬টি হাসকিং মিলের মধ্যে কোনোভাবে টিকে আছে মাত্র ২৫টি। বাকিগুলো বন্ধ হয়ে গেছে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে।
তালোড়া চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুভাস প্রসাদ কানু জানান, বাজারে ধানের দর বেশি হওয়ায় চালের বাজারও চড়া। সব ধরনের চালের মিলিং খরচ একই হলেও এক মণ ধান থেকে পাওয়া যায় গড়ে ২৫ কেজি চাল। মৌসুমের শুরুতে ধান কিনে রাখলে কিছুটা লাভ হয় জানিয়ে সুভাষ প্রসাদ কানু বলেন, এখন উন্নত মানের এক কেজি চিকন চাল উৎপাদন খরচ প্রায় ৭০ টাকা, বাজার দরও একই। খুচরা বাজারে চিকন চাল বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭২ টাকা দরে। মাধ্যম মানের চাল প্রতি কেজিতে খরচ হচ্ছে ৫৮ থেকে ৫৯ টাকা। কখনো কখনো আরও বেশি। বাজার দরও প্রায় একই।