• বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৫৬ অপরাহ্ন

নারায়ণগঞ্জে ৮২টি মামলার ৩৫টিতে প্রধান আসামি শেখ হাসিনা

ডেস্ক রিপোর্ট / ১২০ Time View
Update : রবিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৪

জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যা ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় গত ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের সাতটি থানায় ৮২টি মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৫টি মামলার প্রধান আসামি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর সবকটি মামলায়ই আসামি করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জের আলোচিত-সমালোচিত চরিত্র সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে।

৮২টি মামলার মধ্যে ৩৭টি হত্যা মামলা এবং ৪৫টি হত্যাচেষ্টা মামলা। মামলাগুলোতে আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রীদের পাশাপাশি স্থানীয় এমপি, মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতাদের আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় এজাহারনামীয় আসামির সংখ্যা সাড়ে ৬ হাজারের বেশি এবং অজ্ঞাতপরিচয় আসামির সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছে ৩৫১ জন। জুলাই আগস্টের আন্দোলনে নারায়ণঞ্জের সাইনবোর্ড থেকে শিমরাইল পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এবং সাইনবোর্ড থেকে জালকুড়ি অংশে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের অন্তর্ভুক্ত ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায়ই সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে। এ দুটি থানায় মোট মামলা হয়েছে ৬৩টি।

এর মধ্যে সিদ্ধিরগঞ্জে ৪০ ও ফতুল্লায় ২৩টি মামলা করা হয়।

সিদ্ধিরগঞ্জে হত্যা মামলা ২১টি ও হত্যাচেষ্টার মামলা ১৯টি। এই থানায় করা মোট মামলার মধ্যে ১২টিতে প্রধান আসামি শেখ হাসিনা। ফতুল্লায় হত্যা মামলার সংখ্যা সাতটি এবং হত্যাচেষ্টা মামলা ১৬টি। এখানে মোট ১২টি মামলার প্রধান আসামি শেখ হাসিনা।

সোনারগাঁও থানায় ছয়টি মামলা হয়। এর মধ্যে চারটি হত্যা মামলা এবং দুটি হত্যাচেষ্টা মামলা। ছয়টি মামলায়ই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। রূপগঞ্জে একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। এতে প্রধান আসামি শেখ হাসিনা। আড়াই হাজার থানায় দুটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। দুটি মামলায়ই প্রধান আসামি করা হয়েছে শেখ হাসিনাকে। বন্দর থানায় চারটি হত্যাচেষ্টা মামলা করা হয়েছে। এই থানায় কোনো হত্যা মামলা নেই এবং কোনো মামলাতেই শেখ হাসিনাকে আসামি করা হয়নি।

নারায়ণগঞ্জ সদর থানা এলাকায়ও আন্দোলনের সময় ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। এই থানায় মোট মামলার সংখ্যা ছয়টি। তিনটি হত্যা ও তিনটি হত্যাচেষ্টা মামলা। এর মধ্যে দুটি হত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান আসামি।

নারায়ণগঞ্জে সাতটি থানার অফিসার ইনচার্জদের (ওসি) সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মামলার অনেক আসামিরাই পটপরিবর্তনের পর গা-ঢাকা দিয়ে আছেন। এদের মধ্যে যাদের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে, তাদের গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা ছাড়াও মামলাগুলোয় কেন্দ্রীয় নেতারা আসামি আছেন। ফলে অনেককেই গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছে না।

আসামির মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীরকে গত ২৫ আগস্ট রাজধানীর শান্তিনগরের বাসা থেকে আটক করে পুলিশ। পরে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে রূপগঞ্জে গুলিতে নিহত দশম শ্রেণির ছাত্র রোমান মিয়া হত্যা মামলায় তাকে ছয় দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে আবার ১ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের নিহত শফিকুল ইসলাম শফিক ও বাবুল হত্যা মামলায় দ্বিতীয় দফায় তিন দিন করে মোট ছয় দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। এরপর ১৮ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানায় করা পারভেজ হত্যা মামলায় গোলাম দস্তগীর গাজীর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। বর্তমানে তাকে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে রাখা হয়েছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।

আদালত পুলিশ পরিদর্শক কাইয়ুম খান জানান, নারায়ণগঞ্জে করা মামলাগুলোয় এজাহারনামীয় আসামির সংখ্যা ৬ হাজার ৬৮৬ জন। মামলাগুলোতে অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছে আরও ১৮ থেকে ২০ হাজার। মামলাগুলোর বিপরীতে বিভিন্ন থানায় এ পর্যন্তÍ গ্রেপ্তার হয়েছে ৩৫১ জন। এর মধ্যে এজাহারনামীয় রয়েছেন ২৪৯ জন ও সন্ধিগ্ধ ১০২ জন। তবে মামলাগুলোয় গ্রেপ্তার হওয়া কেউই এখন পর্যন্ত জামিন নেননি জানান এই কর্মকর্তা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category