সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতাল যেন কর্মবিরতির তীর্থস্থান হয়ে উঠেছে। যেখানে আসলে রোগীরা চিকিৎসা পাওয়ার কথা সেখানে কয়েক দিন পর ডাক্তার, ইন্টার্ন চিকিৎসক, মেডিকেল স্টাফ বিভিন্ন দাবি নিয়ে কর্মবিরতি পালন করে। তাদের এমন কর্মসূচিতে অসহায় হয়ে পড়ে সাধারণ রোগীরা।
জানা যায়, সিলেট জেলাসহ আশপাশের জেলাগুলো থেকে প্রতিদিন রোগীরা ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে আসে প্রয়োজনীয় সেবা পাওয়ার জন্য। সরকার রোগীদের সুবিধার কথা চিন্তা করে জেলার একমাত্র সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসাসেবায় আমূল পরিবর্তন এবং উন্নত মেসিন স্থাপন করার পাশাপাশি প্রতিটি বিভাগে উন্নতি করেছে। অন্যান্য প্রাইভেট হাসপাতালে সেসব সুবিধা পাওয়া যায় না সেসব সুযোগ সুবিধা অল্প খরচে রোগীরা এই হাসপাতালে পেয়ে যান। প্রতিদিন সকাল হলেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রোগীরা ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে আসেন চিকিৎসা নিতে। কিন্তু কয়েক দিন পর পর সরকারি এই হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স, আয়াসহ হাসপাতালের স্টাফরা বিভিন্ন দাবীতে কর্মবিরতি পালন করে থাকেন। যার ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ রোগীদেরকে।
গতকাল থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি ছাড়া ডাক্তার পদবি ব্যবহার বন্ধসহ পাঁচ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ‘কমপ্লিট শাটডাউনে’ সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ সিলেটের সকল মেডিকেল কলেজের আন্দোলনরত ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকাল ৯টা থেকে এ কর্মসূচির পালন করছেন তারা। এদিকে দাবির সাথে একাত্মতা জানিয়ে চিকিৎসকদের প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ রাখা হবে আজ। ইমার্জেন্সি ও আইসিইউ বিভাগ ছাড়া সকাল থেকে বন্ধ রয়েছে আউটডোরে সকল চিকিৎসা সেবা। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীদের।
ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বলেন, দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী এমবিবিএস অথবা বিডিএস ছাড়া কেউ চিকিৎসক পরিচয় দিতে পারবে না। দ্রুত ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ এবং বিসিএসের চাকরিতে প্রবেশ বয়সসীমা ৩৪ বছর পর্যন্ত বাড়ানো। মানহীন বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো বন্ধ করতে হবে। বিএমডিসি অ্যাক্ট-২০১০-কে চ্যালেঞ্জ করে যে রিট করা হয়েছে, যার রায় আগামী ১২ মার্চ হওয়ার কথা তা যাতে বিলম্ব না করা হয়। তারা আরোও বলেন, দাবির সাথে একাত্মতা জানিয়েছেন সকল ডাক্তাররা। তাই আজ চিকিৎসকদের সব ধরনের প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ থাকবে। এতে রোগীদের সাময়িক সমস্যা হলেও এই আন্দোলন বাংলাদেশের চিকিৎসাখাতকে সংস্কার করবে।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা বলেন, চিকিৎসকরা মানুষের জীবন বাচিঁয়ে তোলার চেষ্টা, মানুষকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করেন এজন্য তাদের সেবক বলা হয়ে থাকে। কিন্তু তারা চিকিৎসা বন্ধ করে দিলে সাধারণ রোগীরা কার কাছে যাবে, কোথায় যাবে। অসুস্থ রোগীরা এখানে এসে চিকিৎসা না পেয়ে কষ্ট করছেন কিন্তু চিকিৎসকরা তাদের কর্মবিরতি পালন করছেন সেটা কোন ভাবে কাম্য নয়। আমরা আশা করবো রোগীদের কষ্টের কথা চিন্তা করে তারা যেন রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার কাজ শুরু করবেন।