মিরসরাইয়ে স্বাধীনতার পর থেকে দুটি সেতুর অভাবে বাঁশের সাঁকো দিয়ে কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করছে ৫৩ বছর ধরে। মায়ানী ও সাহেরখালী ইউনিয়ন ঘেঁষে যাওয়া সাহেরখালী খালের ওপর, অন্যটি মিঠানালা ইউনিয়নের পশ্চিম মলিয়াইশ গ্রামে বামনসুন্দর খালের এ দুটি সাঁকোর অবস্থান। এ দুই ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রায় ৪০ হাজার মানুষের বসবাস। সেতু দুটি নির্মাণ হলে বদলে যাবে এ এলাকার মানুষের ভাগ্য। পাল্টে যাবে অর্থনৈতিক চিত্র।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নড়বড়ে অবস্থায় বাঁশের সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যাচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। জেলেরা মাছের খাঁচা নিয়ে ভয়ে ভয়ে পার হচ্ছে। যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা। ইলিশ মৌসুমে মাছ আহরণ করে স্থানীয় জেলেরা রাতে-দিনে এ সাঁকো দিয়ে মাছ নিয়ে যায়। সাঁকোটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সময়মতো মাছ বাজারে বিক্রি করা যায় না। বৃষ্টি হলে অবহেলিত এ মানুষদের দুর্ভোগ দ্বিগুণ বেড়ে যায়। স্থানীয় খুদিরাম নামের এক জলদাস জানান, আমার ৭০ বছর বয়সে কত নেতা প্রতিশ্রতি দিল, ভোটের পর আর খবর নেয় না। আমরা আর প্রতিশ্রতি নয়, বাস্তবতা দেখতে চাই। সাহেরখালী জলদাসপাড়া, মায়ানী জয়নগর জলদাসপাড়া, মায়ানী মির্জানগর জলদাসপাড়ার মানুষের একমাত্র যোগাযোগের সাঁকো এটি। এ সাঁকোর স্থলে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হলে এখানকার মানুষের কষ্ট লাঘব হবে বলে এলাকাবাসী জানায়।
স্থানীয় বাহার মিয়া জানান- সরকার আসে, সরকার যায়, কিন্তু প্রতিশ্রতি রয়ে যায় মুখে মুখেই। জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচনের আগে সেতু করার ওয়াদা দিলেও নির্বাচনের পর আর খবর থাকে না। তৎকালীন বিএনপি সরকারের আমলে কয়েকবার প্রতিশ্রতি দিয়েও রাখতে পারেননি স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য। এখন ভোট এলে কেবল জনপ্রতিনিধিরা সেতু নির্মাণের আশ্বাস দেয়। পরে আর খোঁজ থাকে না।
আলতাফ হোসেন পলাশ নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, বর্ষাকালে খালের পানি বেড়ে গেলে মানুষের দুর্ভোগের শেষ থাকে না। তখন পানির স্রোতে বাঁশের সাঁকো ভেঙে যায়। ফলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। গ্রামের ছোট ছেলেমেয়েরা বিদ্যালয়ে যেতে পারে না। এক রকম বন্দি জীবনযাপন করে। এ বিষয়ে উপজেলা এলজিআরডি প্রকৌশলী রনি সাহা বলেন, সেতু দুটি নির্মাণ করা খুবই জরুরি। আশা করছি, চলতি অর্থবছরে অনুমোদন হলে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যাওয়া যাবে।