• রবিবার, ০১ জুন ২০২৫, ০৩:২৭ পূর্বাহ্ন

অনিয়ম আর দূর্নীতির মহাসাগরে ডুবে আছে সিলেট রেলওয়ে স্টেশন, দুদকের অভিযান

ডেস্ক রিপোর্ট / ৫ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ২৯ মে, ২০২৫

 

সরকারকে মাল দরিয়া মে ঢাল সিলেট অঞ্চলে বহুল প্রচলিত একটি প্রবাদ। এবার সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে পাওয়া গেলো এর প্রত্যক্ষ প্রমাণ। আর প্রমাণটি পেলেন স্বয়ং দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক কর্মকর্তারা।

বুধবার সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে অভিযান শুরু করেন দুদক সিলেট কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। চলে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে টিকিট কালোবাজারিদের দৌরাত্ম্যের কথা শুনে তারা অভিযানে নেমেছিলেন। কিন্তু অভিযান শুরুর পর থ বনে যান তারা। কারণ, তারা দেখেন রীতিমতো অনিয়মের মহোৎসব চলছে সেখানে।

টিকিট কালোবাজারি থেকে শুরু করে সরকারি মালামাল বিক্রি, টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা, নকশা অনুমোদন ছাড়াই নির্মাণ কাজ, কি হচ্ছেনা সেখানে!

দুদক কর্মকর্তারা জানান, সংস্কারের নামে স্টেশনের পুরোনো প্লাটফর্ম থেকে সাড়ে তিন টন রড তুলে নিলাম ছাড়াই ১ লাখ ১৭ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। শুধুই কি বিক্রি করা হয়েছে? সেই টাকাগুলোও নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তারা। সরকারি সম্পদ এভাবে বিক্রির কোনো নিয়ম নেই, ভাগবাটোয়ারা করে নেয়ারতো প্রশ্নই উঠেনা।

এদিকে আবার রেলপথ নির্মাণে ব্যবহারের জন্য আনা পাথরের হিসাবও অসচ্ছ এবং এক-তৃতীয়াংশই ছাতকে পাঠানোর কথা উল্লেখ করা হলেও এর কোনো লিখিত নথি পাওয়া যায়নি।

সবচেয়ে ভয়াবহ খবর হচ্ছে, স্টেশনের দুটি প্লাটফর্মের ২ কোটি টাকার সংস্কার কাজ চলছে অনুমোদনবিহীন নকশায়।

দুদক সিলেট কার্যালয়ের কর্মকর্তা জুয়েল মজুমদার বলেন, নকশার অনুমোদন হয়নি। অথচ কাজ চলছে। যদি সরকার এটি বাতিল করে তাহলে কি হবে? জনগনের টাকাতো পুরোটাই নষ্ট হবে।

দুদক কর্মকর্তারা টিকিট কালোবাজারির বিষয়টার সত্যতাও নিশ্চিত হয়েছেন। যেমন স্টেশনের গেট কিপার আজিজ স্লিপার শ্রেণীর ১২০০ টাকার টিকিটের জন্য ২০০০ টাকা দাবি করতে দেখা গেছে।

এ প্রসঙ্গে জুয়েল মজুমদার বলেন, টিকিট থাকার কথা অনলাইনে। অথচ দালালরা সেগুলো কীভাবে নিজেদের কাছে রাখে, সেটি খতিয়ে দেখা জরুরী।

দুদক কর্মকর্তারা অভিযানের সময় উপসহকারী রেজাউল হককে রড বিক্রি, অনুমোদনহীন নকশা নিয়ে ২ কোটি টাকার সংস্কার কাজ শুরুর কারণ, পাথরের হিসাবে অসচ্ছতা ইত্যাদি বিষয়ে প্রশ্নের পর প্রশ্ন করে গেলেও সন্তোষজনক কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।

তবে রড বিক্রির ১ লাখ ১৭ হাজার টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারার বিষয়টি স্বীকার করেছেন রেজাউল হক।

আর টিকিট কালোবাজারি প্রসঙ্গে সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক নুরুল ইসলাম বলেন, পুরো বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখবো।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category