• বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৪০ পূর্বাহ্ন

আওয়ামী লীগ আমলের সচিবরা এখন বিদায়ের পথে

ডেস্ক রিপোর্ট / ১১০ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪

আওয়ামী সরকারের পতনের পর দায়িত্ব নিয়েই গেল চার মাসে প্রশাসন ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে অভিযোগ উঠেছে, সাবেক সরকারের কতিপয় কর্মকর্তার কারণে প্রশাসনে এখানও কাক্সিক্ষত গতি ফেরানো সম্ভব হয়নি। ঢেলে সাজানোর অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে প্রশাসনের শীর্ষপদেও (সচিব) রদবদল আনা হয়েছে। বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে সচিব পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগও দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সদ্য শূন্য হওয়া জননিরাপত্তা বিভাগ, সুরক্ষা সেবা বিভাগসহ সাতটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে সচিবের পদ শূন্য। আগামী বিশ দিনের মধ্যে বিদায় নেবেন প্রশাসনের আরও পাঁচ সচিব। এখন চলছে আওয়ামী সরকারের পদায়নে এখনও যারা বহাল আছেন, তাদের বিদায় এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে চাকরিকাল শেষ হবে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব ড. মো. আনোয়ার উল্লাহ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহা. সেলিম উদ্দিন, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব একেএম শামিমুল হক ছিদ্দিকী, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ।

জানা গেছে, প্রশাসনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে বর্তমান সরকারের আমলে ৮০ জন সচিব হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। এই ৮০ জনের মধ্যে ৩৮ জন বিগত আওয়ামী লীগ আমলে নিয়োগ পাওয়া। বাকি ৪৪ জনের মধ্যে ১৩ জনকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আবার শূন্যপদে নতুন সচিব নিয়োগের প্রক্রিয়াও চলছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান বলেন, প্রশাসনে সচিব পদে পদোন্নতি ও পদায়ন চলমান রয়েছে। এবার আমরা বি প্র্যাকটিক্যাল। মানুষের কাছে গিয়ে যতটুকু গ্রহণযোগ্য, সেটা দেওয়ার চেষ্টা করব।

তবে রাজনৈতিক সরকারের মতো প্রশাসনের শীর্ষপদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিরোধিতা করছেন পদোন্নতিপ্রত্যাশী প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা। তাদের যুক্তি, পদোন্নতি দিয়ে সচিব পদে পদায়ন হলে প্রশাসনে আরও গতি বাড়বে। এমনকি যারা বিগত সরকারের লেজুড়ভিত্তি করেছেন, তাদের বাইরেও অনেক কর্মকর্তা প্রশাসনে আছেন। তাদের দিয়ে শূন্যপদ পূরণ করা যেতে পারে বলেও মত দিয়েছেন কোনো কোনো কর্মকর্তা।
এদিকে আওয়ামী সরকারের নিয়োগ পাওয়া শীর্ষ কর্মকর্তাদের এখানও প্রশাসনে বহালতবিয়তে থাকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরাম। সংগঠনটির নেতাদের প্রশ্ন, আওয়ামী আমলে সুবিধাভোগীরা কীভাবে এখনও প্রশাসনে বহাল? তাদের দাবি, গত ১৬ বছর বঞ্চিত তাদের করে রাখা হয়েছে। কারও কারও পদোন্নতি দেওয়া হলেও ডাম্পিং পোস্টিং দেওয়া হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব বৈষম্য দূর করার জোর দাবি জানান তারা।

আওয়ামী আমলের যারা এখনও বহাল রয়েছেন তারা হলেন- শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মো. মোকাব্বির হোসেন, বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের কাজী এনামুল হাসান, পরিকল্পনা কমিশনের আরেক সদস্য ড. মোহাম্মদ কাউসার আহাম্মাদ, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মো. কামরুল হাসান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নাসরীন আফরোজ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ফরিদ আহম্মেদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ড. মো. মুশফিকুর রহমান, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নাজমুল আহসান, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মো. আশরাফ উদ্দিন, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একেএম শামিমুল হক ছিদ্দিকী, অর্থ বিভাগের ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মো. মাহমুদুল হোসাইন খান, জাতীয় পরিকল্পনা একাডেমির মহাপরিচালক সুকেশ কুমার সরকার, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস একাডেমির রেক্টর ড. মোহাম্মদ ওমর ফারুক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের নাজমা মোবারেক, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ইসরাত চৌধুরী, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী, জাতীয় উন্নয়ন প্রশাসন একাডেমির রেক্টর ড. মো. সহিদ উল্লাহ, বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য রেহানা পারভীন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মো. রুহুল আমিন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মো. সেলিম উদ্দিন, দুর্নীতি দমন কমিশনের খোরশেদা ইয়াসমীন, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের মো. আমিন উল আহসান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ও চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সাঈদ মাহবুব খান, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের ড. মো. সারোয়ার বারী এবং বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মইনুল খান।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category