• মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১১:০৯ পূর্বাহ্ন

আপিল করার অনুমতি পেলেন এটিএম আজহার

ডেস্ক রিপোর্ট / ৩৮ Time View
Update : বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদনের শুনানি নিয়ে তাকে আবারও আপিল দায়েরের অনুমতি দিলেন আপিল বিভাগ। ফলে রিভিউ থেকে আবারও আপিল শুনানি হবে— এমন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা এটাই প্রথম।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে জামায়াত নেতা আজহারের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী। তাকে সহযোগিতা করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির ও ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন।

এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদনের শুনানি পিছিয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৪ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বেঞ্চে এক বিচারপতি না থাকায় আদালত শুনানির দিন পিছিয়ে দেন।

২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায়ে ২, ৩ এবং ৪ নম্বর অভিযোগে আজহারকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। আর অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধ সংক্রান্ত ৫ নম্বর অভিযোগে ২৫ বছর জেল ও ৬ নম্বর অভিযোগে নির্যাতনের দায়ে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া ১ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বলে রায়ে উল্লেখ করে ট্রাইব্যুনাল। পরে আজহারুল ইসলাম খালাস চেয়ে ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৯ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল দায়ের করা হয়।

ওই আপিলের ওপর ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর রায় ঘোষণা করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ। আপিলের রায়ে বিচারপতিগণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে ২, ৩ এবং ৪ নম্বর অভিযোগে আজহারের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখা হয়। পাশাপাশি ৬ নম্বর অভিযোগের দণ্ড বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। আর ৫ নম্বর অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আজহারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিলো ৬টি।

প্রথম অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ থেকে ২৭ মার্চের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, ভাসানী (ন্যাপ) নেতা ও রংপুর শহরের বিশিষ্ট আয়কর আইনজীবী এ ওয়াই মাহফুজ আলীসহ ১১ জনকে অপহরণ করে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। এরপর তাদের ৩ এপ্রিল রংপুর শহরের দখিগঞ্জ শ্মশানে নিয়ে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করা হয়।

দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়, আসামি একাত্তরের ১৬ এপ্রিল তার নিজ এলাকা রংপুরের বদরগঞ্জ থানার ধাপপাড়ায় ১৫ জন নিরীহ নিরস্ত্র বাঙালিকে গুলি করে হত্যা করে তাদের বাড়িতে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ করেন।

তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়, আসামি একই বছরের ১৭ এপ্রিল নিজ এলাকা রংপুরের বদরগঞ্জের ঝাড়ুয়ারবিল এলাকায় ১২শ’র বেশি নিরীহ লোক ধরে নিয়ে হত্যা করে তাদের বাড়িতে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ করেন।

চতুর্থ অভিযোগে বলা হয়, একাত্তরের ১৭ এপ্রিল কারমাইকেল কলেজের ৪ জন অধ্যাপক ও ১ জন অধ্যাপকের স্ত্রীকে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে অপহরণ করে দমদম ব্রিজের কাছে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেন।

পঞ্চম অভিযোগে বলা হয়, ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে রংপুর শহর ও বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মহিলাদের ধরে এনে টাউন হলে আটকে রেখে ধর্ষণসহ শারীরিক নির্যাতন চালান। একইসঙ্গে মহিলাসহ নিরীহ নিরস্ত্র বাঙালিদের অপহরণ, আটক, নির্যাতন, গুরুতর জখম ও গণহত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন এ আসামি।

ষষ্ঠ অভিযোগে বলা হয়, একাত্তরের নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে রংপুর শহরের গুপ্তপাড়ায় একজনকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। একই বছরের ১ ডিসেম্বর রংপুর শহরের বেতপট্টি থেকে এজনকে অপহরণ করে রংপুর কলেজের মুসলিম ছাত্রাবাসে আটকে রেখে অমানুষিক নির্যাতন ও গুরুতর জখম করেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category