নড়াইলের কালিয়া উপজেলার নড়াগাতি থানার একটি গ্রামের নাম পানিপাড়া। এখানকার পরিবেশবান্ধব ও কৃষিভিত্তিক পর্যটন কেন্দ্র ‘অরুনিমা রিসোর্ট গলফ ক্লাব ও ইকো পার্কে’ প্রতি বছর শীত মৌসুমে বিভিন্ন দেশ থেকে অতিথি পাখি আসে। এ বছরও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। শীতের শুরুতেই পাখি আসছে ঝাঁকে ঝাঁকে। অতিথি পাখির পাশাপাশি আছে দেশি পাখি। সব মিলে অরুনিমা রিসোর্ট গলফ ক্লাব ও ইকো পার্ক এখন পাখির রাজ্যে পরিণত হয়েছে। লাখো অতিথি ও দেশি পাখির কিচির মিচির শব্দে ঘুম ভাঙে পানিপাড়া গ্রামের মানুষের। পাখির কলতানে মুখরিত হচ্ছে পুরো এলাকা।
২০০৪ সাল থেকে প্রতি বছরই শীত মৌসুমসহ বছরের আট মাস বিভিন্ন প্রজাতির পাখির অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিতি লাভ করে এলাকাটি। পাখির জন্য সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করায় একযুগ আগে থেকেই পানিপাড়া গ্রাম পরিচিত হয় পাখি গ্রাম হিসেবে।
নড়াইল শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে নড়াগাতি থানার পানিপাড়া গ্রামে মধুমতী নদী থেকে সামান্য দূরে প্রায় ৫০ একর জমির ওপর ‘অরুনিমা রিসোর্ট গলফ ক্লাব ও ইকো পার্ক’র অবস্থান। নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কেয়া রেনু রায় বলেন, পরিজয়ী পাখি আমাদের প্রকৃতির জন্য খুব উপকারী। পাখিদের বসবাসের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা দরকার। পাখি শিকার বন্ধে আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে।
অরুনিমা ইকো পার্কের চেয়ারম্যান খবির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ১০ বছর আগেও শীত মৌসুমে জেলার বিভিন্ন এলাকার খালে, বিলে ও জলাশয়ে অতিথি পাখির বিচরণ দেখা যেত। কালের আবর্তে বিভিন্ন এলাকাতে অতিথি পাখির আধিপত্য কমে গেলেও পানিপাড়া গ্রামের অরুনিমা ইকো পার্কে পাখিদের কোলাহল একটুও কমেনি। আমরা চেষ্টা করছি এটিকে দেশের প্রধান কৃষি পর্যটনকেন্দ্র ও পাখিদের অভয়ারণ্যে পরিণত করতে।
আফরোজা জেরিন নামে এক দর্শনার্থী বলেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় পরিবেশ আর বিনোদনের আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা রয়েছে এখানে। এরই মধ্যে এখানে ভিড় জমেছে বিনোদনপ্রিয় দেশি-বিদেশি বহু পর্যটকদের। তাদের পদভারে এখন মুখরিত কৃষিভিত্তিক পরিবেশবান্ধব এ পর্যটন কেন্দ্রটি।
হাসান রহমান নামে আরেক দর্শনার্থী জানান, তিনি সময় পেলেই পাখি দেখতে ছুটে আসেন। মানসিক প্রশান্তির জন্য প্রকৃতির এমন অপরূপ সৌন্দর্য বিশেষ করে এখানকার পাখিদের এ অবাধ বিচরণের দৃশ্য বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
পাখিপ্রেমী রুণা খানম বলেন, একসঙ্গে এত পাখি আমি আগে কখনও দেখিনি। এ যেন অবিশ্বাস্য এক গল্প। এখানে পাখিদের কোনো ভয় নেই। খুব কাছ থেকে পাখি দেখা যায় এখানে।