• শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ০১:৩২ পূর্বাহ্ন

জুলাই-আগস্ট আন্দোলন: বিয়ানীবাজারে নিহতদের ময়নাতদন্ত ছাড়াই নিষ্পত্তি করতে হচ্ছে মামলা

সামিয়ান হাসান / ৬ Time View
Update : শুক্রবার, ৯ মে, ২০২৫

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যার ঘটনায় বিয়ানীবাজার থানায় দায়ের হওয়া ৩টি মামলার তদন্ত চলছে বেশ জোরেশোরে। মামলাগুলোর দু’টি তদন্ত করছে সিলেটের সিআইডি আর অপর মামলার তদন্ত করছে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ।

জানা যায়, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর বিয়ানীবাজার পৌরশহরে ছাত্র-জনতার উল্লাসকালে গুলিতে নিহত ৩ জনের লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয়। ময়নাতদন্ত না হওয়ায় হত্যা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা কিছুটা বিপাকে পড়ছেন। মামলার প্রয়োজনে লাশের ময়নাতদন্ত করতে গিয়ে স্বজনদের বাধার সম্মুখীনও হয়েছেন তাঁরা। এতে মামলাগুলোর অধিকাংশই নিষ্পত্তি করতে হচ্ছে ময়নাতদন্ত ছাড়াই।


আইনশৃংখলা বাহিনীর সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র বলছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ব্যক্তিদের ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয়। মামলার নিষ্পত্তির জন্য ময়নাতদন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু যেসব মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয়েছে, আবেগ-অনুভূতির কারণ দেখিয়ে সেগুলোর ময়নাতদন্ত করতে দিচ্ছেন না নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা।


৫ আগস্ট বিয়ানীবাজারে নিহত তারেক আহমদ, রায়হান আহমদ ও ময়নুল ইসলামকে ৬ আগস্ট দিনের বিভিন্ন সময়ে ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করেন স্বজনরা। তাদের সবার শরীরে গুলির চিহ্ন রয়েছে। তারেক হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিয়ানীবাজার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো: ছবেদ আলী বলেন, ‘ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় লাশ তুলতে চাইলে পরিবার বাধা দেয়। ফলে ময়নাতদন্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে অন্যান্য তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহসহ মামলার তদন্তকাজ চলছে।’
এখন লাশ তুলে ময়নাতদন্ত করতে না দেওয়ার বিষয়ে নিহত রায়হান আহমদের মা ইনারুন নেছা বলেন, ‘হত্যার ভিডিও, ছবিসহ নানা তথ্য রয়েছে। এখানে লাশ তুলে ময়নাতদন্তের প্রয়োজন পড়ে না। তাই লাশ উত্তোলন না করার আবেদন জানানো পর পুলিশ লাশ তোলেনি। আমরা হত্যার বিচারের অপেক্ষায় আছি।’
সিলেট সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, অনেক মামলার তথ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় সেসব মামলায় সংশ্লিষ্ট আসামিকে সরাসরি অভিযুক্ত করার বিষয়টি কিছুটা জটিল। তবে ময়নাতদন্ত ছাড়াও অন্য যেসব বিষয় রয়েছে, সেগুলো দিয়ে মামলার তদন্তের কাজ চলছে।


ময়নাতদন্ত নিয়ে সিলেট জেলা জজ আদালতের আইনজীবি এডভোকেট মো: আমান উদ্দিন বলেন, ‘হত্যা মামলায় ময়নাতদন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরিবারের অনুরোধের কারণে মরদেহের ময়নাতদন্ত করা যায়নি। তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে এতে কোনো অসুবিধা হবে না।’
তিনি বলেন, ‌’ময়নাতদন্ত না থাকলেই যে হত্যা মামলার বিচার হবে না আইনে এমন কিছু নেই। ময়নাতদন্ত হলো ঠিক কী কারণে মৃত্যু হলো তা নির্দিষ্ট করে জানা। সে সময় মামলা করার পরিস্থিতি ছিল না। একটা মামলা প্রমাণ করতে যেসব সাক্ষ্যপ্রমাণ লাগে, তা যদি পাওয়া যায় তাহলে ময়নাতদন্ত ছাড়াও বিচার হতে পারে’।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category