• বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:১৭ পূর্বাহ্ন

ট্রাম্পের জয়ের নেপথ্যে যারা

ডেস্ক রিপোর্ট / ১৫৯ Time View
Update : শুক্রবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৪


যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়ের পেছনে এবার ভূমিকা রেখেছে হিসপানিক ভোটার, তরুণ জনগোষ্ঠী ও কলেজ ডিগ্রি সম্পন্ন না করা মার্কিনিরা। সেসব ভোটারের সমর্থনে গোটা দেশেই প্রচুর ভোট পেয়ে আধিপত্য বিস্তারী অবস্থানে চলে এসেছেন তিনি।

জনতুস্টিমূলক প্রচারে ট্রাম্প বৈশ্বির অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতা থেকে শ্রমিকদের রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। করের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন ধরনের ছাড় দেবেন বলে জানিয়েছেন। এসব কারণে শ্রমজীবী ভোটারদের মধ্যে ট্রাম্পের অবস্থান দৃঢ় হয়েছে। দেখা গেছে, শ্রমজীবী শ্রেণি ও অশ্বেতাঙ্গ ভোটারদের ভোটেই ট্রাম্প বিজয়ী হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে।

এডিসন রিসার্চের তথ্য বলছে, প্রায় ৪৬ শতাংশ স্ব-স্বীকৃত হিসপানিক ভোটার ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছেন এবার। অথচ ২০২০ সালে বাইডেনের বিপরীতে হিসপানিক ভোটারদের মাত্র ৩২ শতাংশে ভোট পেয়েছিলেন তিনি।

রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, সাধারণত হিসপানিক ভোটাররা ডেমোক্র্যাটদের ভোট দেন। গত কয়েক দশক ধরে তারা এটি করে আসছে। ফলে এবার রিপাবলিকান ট্রাম্পের এত ভোট পেয়ে যাওয়ার বিষয়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

ট্রাম্পের ২০২০ সালের নির্বাচনি প্রচারের সময় হিসপানিক ভোটারদের দলে টানার জন্য কাজ করেছিলেন জিয়ানকারলো সোপো। তিনি বলেন, তরুণ হিসপানিকরা পূর্বপুরুষদের মতো চিন্তা করেন না যারা ডেমোক্র্যাটদের ৫০ বছর ধরে ভোট দিয়ে এসেছে।

এবারের নির্বাচনে ট্রাম্প ৫৫ শতাংশ হিসপানিক পুরুষদের সমর্থন পেয়েছেন। অন্যদিকে হিসপানিক নারীদের ৩৮ শতাংশ ট্রাম্পকে সমর্থন করেছেন। ট্রাম্প বরাবরই নিজ প্রচারে অভিবাসন নিয়ে নানা সমালোচনা করেছেন। বিশেষ করে অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো নিয়ে কড়া অবস্থান নেওয়ার পক্ষে তিনি। অনেক হিসপানিক ভোটারই ট্রাম্পের এ অবস্থানটিকে সমর্থন করেন। এডিসন রিসার্চের বুথফেরত জরিপ বলছে এ কথা।

জরিপে অংশ নেওয়া হিসপানিক ভোটারদের এক-চতুর্থাংশই বলেছেন, কোনো কাগজপত্র ছাড়া যেসব ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন, তাদের ফেরত পাঠানো উচিত। ইউএস সেনসাস ব্যুরো বলছে, বেশির ভাগ হিসপানিক ভোটারের কলেজ ডিগ্রি নেই। যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমজীবীদের মধ্যেও তারা সংখ্যায় উল্লেখযোগ্য অবস্থানে রয়েছে। হিসপানিক ভোটাররা যুক্তরাষ্ট্রের অন্য ভোটারদের তুলনায় বয়সে তরুণ। তারা সম্পদ গড়ে তোলার মতো সময় পায়নি এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অর্থনৈতিক ডামাডোলের মুখে পড়েছে। ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সী ভোটারদের ৪৩ শতাংশের ভোট পেয়েছেন তিনি।

প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ভোটার মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। প্রায় ৪৬ শতাংশ বলেছে, তাদের পরিবারের আর্থিক পরিস্থিতি চার বছর আগের তুলনায় খারাপ অবস্থায় রয়েছে। ২০২০ সালে মাত্র ২০ শতাংশ এই কথা বলেছিলেন।

নির্দলীয় ইউনোডসইউএস লাটিনো ভোটার ইনিশিয়েটিভের ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্ল্যারিসা মার্টিনেজ ডে ক্যাস্ট্রো বলেছেন, রিপাবলিকানরা ক্রমাগত ভোটারদের অর্থনীতি প্রশ্নে সংযুক্ত করতে পেরেছে যা ডেমোক্র্যাটরা সেভাবে পারেনি। এটি অর্থনীতি প্রশ্নে গণভোট ছিল এবং হিসপানিক ভোটারদের জন্য এটি ধারাবাহিকভাবে এক, দুই ও তিন নম্বর ইস্যু ছিল।’

ব্যাটলগ্রাউন্ড অঙ্গরাজ্য অ্যারিজোনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ২০২০ সালে জয়ের দেখা পেয়েছিলেন। সেখানে এবার এক হিসপানিক ভোটার ট্রাম্পকে ভোট দেওয়ার পর জানান, রিপাবলিকানদের নীতি তার পছন্দ হয়েছে। ২৮ বছর বয়সী ওই ভোটার বলেন, আমার জন্য তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো পারিবারিক মূল্যবোধ, প্রাণ ও ধর্মের সমর্থন। আমার মনে হয় না কমলার মধ্য দিয়ে ওই মূল্যবোধগুলো উঠে এসেছে।’

রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, কলেজ ডিগ্রি নেই এমন ভোটারদের ৫৬ শতাংশই ট্রাম্পের পক্ষে রায় দিয়েছেন। অন্যদিকে স্নাতক ডিগ্রি রয়েছে এমন ৫৫ শতাংশের সমর্থন পেয়েছেন কমলা হ্যারিস। সূত্র: রয়টার্স


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category