২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সোমবার জাতীয় বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থ উপদেষ্টা এ ঘোষণা দেন। এতে সরকারি চাকরিজীবিদের বেতন বাড়তে পারে ১৫-২০ শতাংশ বলে জানা গেছে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ২০১৫ সালের পর থেকে কোনো বেতন কাঠামো না হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সরকারি কর্মচারীদের বিশেষ সুবিধা বাড়ানোর প্রস্তাব করছি। তবে এই বিশেষ সুবিধা কতটা বাড়ানো হবে তা বাজেট বক্তৃতায় উল্লেখ করা হয়নি।
বর্তমানে সরকারি কর্মচারীরা মূল বেতনের ৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা পান। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটেও সাবেক অর্থমন্ত্রী মাহমুদ আলীও বিশেষ সুবিধা ঘোষণা করেছিলেন। বাজেটের পরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সরকারি কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে নিয়মিত ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্টের সঙ্গে আরও ৫% বিশেষ সুবিধা ঘোষণা করেন। ২০১৫ সাল থেকে সরকারি চাকরিজীবীরা প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট পেয়ে আসছেন। তবে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে, ২০২৩ সালের জুলাই থেকে বার্ষিক ইনক্রিমেন্টের পাশাপাশি অতিরিক্ত ৫ শতাংশ হারে বিশেষ প্রণোদনাও চালু করে আওয়ামী লীগ সরকার। এই বিশেষ প্রণোদনা এখনও অব্যাহত আছে।
অর্থবিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আগামী বাজেটে ১ম থেকে ৯ম গ্রেডের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ১৫ শতাংশ এবং ১০ম থেকে ২০তম গ্রেডভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ২০ শতাংশ মহার্ঘ্য ভাতা (বিশেষ সুবিধা) দেওয়ার চিন্তা করছে সরকার। আগামী ১ জুলাই থেকে সরকারি চাকরিজীবীরা এ সুবিধা পাবেন।
প্রতিবছর কর্মচারীদের যে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি (ইনক্রিমেন্ট) হয়, সেখানে কারো ৩.৭৫ শতাংশ, কারো ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। সরকারি চাকরিজীবীদের জাতীয় বেতন স্কেল পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গ্রেড-১ কর্মকর্তাদের জন্য প্রতি মাসে ৭৮ হাজার টাকা বেতন নির্ধারিত। একইভাবে মন্ত্রিপরিষদসচিব, মুখ্য সচিব ও সমমর্যাদার পদের বেতন ৮৬ হাজার টাকা এবং জ্যেষ্ঠ সচিব ও সমমর্যাদার পদের বেতন ৮২ হাজার টাকা নির্ধারিত। প্রতিবছর বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি (ইনক্রিমেন্ট) হয় গ্রেড-২ পদে ৩.৭৫ শতাংশ, গ্রেড-৩ ও ৪ পদে ৪ শতাংশ, গ্রেড-৫ পদে ৪.৫ শতাংশ, গ্রেড-৬ থেকে ২০ পর্যন্ত পদে ৫ শতাংশ করে।
জানা যায়, বাজেটে বেতন-ভাতার জন্য ৮০–৯০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ থাকবে। ১৫ শতাংশ মূল বেতন বৃদ্ধি হলে ছয় হাজার কোটি এবং ২০ শতাংশে আট হাজার কোটি টাকা বাড়তি প্রয়োজন হবে। তবে বেতন বৃদ্ধির হার কত হতে পারে, তা নিয়ে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি।