হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সম্প্রতি নানা সুবিধাসম্পন্ন দুটি লাউঞ্জ চালু হয়েছে। একটি প্রবাসীদের জন্য বিশেষায়িত ‘প্রবাসী লাউঞ্জ’, অন্যটি যাত্রী ও অপেক্ষমাণ স্বজনদের জন্য ‘ওয়েটিং লাউঞ্জ’। দুটি লাউঞ্জেই রয়েছে ফ্রি ওয়াইফাই সুবিধা, ফ্রি ফোনসেবা, স্বল্পমূল্যে মানসম্পন্ন খাবার, মোবাইল চার্জিং সুবিধা, বিশ্রাম ও নামাজের স্থান, খবরের কাগজ ও একাধিক টেলিভিশন। লাউঞ্জ ব্যবহারকারীরা এ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু এখনও অনেকেই লাউঞ্জের বিষয়টি অবগত নন। এজন্য কর্তৃপক্ষের কম প্রচারণাকে দায়ী করছেন। সরেজমিন দুটি লাউঞ্জ ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
তবে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, লাউঞ্জ দুটি নতুন হয়েছে। এজন্য অনেকেই বিষয়টি জানেন না। ধীরে ধীরে তারা জানছেন এবং দুটি লাউঞ্জেই ভিড় বাড়ছে। জানানোর জন্য প্রচারণা চলছে। কিছুদিনের মধ্যে এমন হবে যে, লাউঞ্জ দুটিতে জায়গার সংকুলান হবে না। লাউঞ্জ আরও বাড়াতে হবে। সেই পরিকল্পনাও নেওয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, গত মাসে প্রবাসী, যাত্রী ও তাদের স্বজনদের কথা ভেবে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে লাউঞ্জ দুটি উদ্বোধন করা হয়। বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনের ভেতরে ইমিগেশন পার হওয়ার পরেই ‘প্রবাসী লাউঞ্জ’-এর অবস্থান। আর ভবনের ভেতরেই ‘ওয়েটিং লাউঞ্জ’। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ওয়েটিং লাউঞ্জে নানা বয়সী ছেলে, মেয়ে ও বাচ্চারা অবস্থান করছেন।
লাউঞ্জ ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তায় রয়েছে বিমানবাহিনী, আনসার এবং আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, লাউঞ্জ দুটিতে প্রবাসী, যাত্রী ও তাদের স্বজনরা যেন ঠিকঠাক সেবা পান, মনিটরিং করা হচ্ছে। বিশেষ করে অনেকেই ফ্লাইট মিস করেন, তাদের পরবর্তী ফ্লাইটের জন্য এতদিন বিমানবন্দরে অপেক্ষা করার নির্দিষ্ট কোনো জায়গা ছিল না। লাউঞ্জ দুটি করার পর ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। সেবা আরও কীভাবে বাড়ানো যায়, এ নিয়ে কাজ চলছে।
প্রবাসী লাউঞ্জে অপেক্ষারত সিলেটের সেজান আহমেদ বলেন, আমি চাইলে সিলেট থেকে সরাসরি যেতে পারতাম। কিন্তু শাহজালালের সেবা আগের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে। এখান থেকে গেলে ৯ ঘণ্টা ট্রানজিট হবে। তারপরও আমি ২ হাজার টাকা খরচ করে এসেছি ভালো সেবার জন্য। সিঙ্গাপুর প্রবাসী নোয়াখালীর নামজুল তিনি জানান, এখানে ফ্রি ওয়াইফাই সেবা, ফোন কলসহ নতুন সেবাগুলোতে প্রবাসীরা উপকৃত হচ্ছে। এজন্য কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ। তবে এটা যেন চালু থাকে।
তবে শাহজালালে অবস্থানরত প্রবাসী, যাত্রী ও স্বজনদের অধিকাংশই বলেছেন তারা লাউঞ্জ দুটি সম্পর্কে জানতেন না। অনেকে জানেন না বলে লাউঞ্জ ব্যবহার করেননি। কর্তৃপক্ষ বলছে, ফ্লাইট মিস যাতে না করেন সেজন্য যাত্রীরা যেন আগেভাগেই বিমানবন্দরে চলে আসেন। আবার তাদের সঙ্গে স্বজনরাও আসেন। আগে মালামাল নিয়ে তারা নানা হয়রানির শিকার হতেন। এখন যাত্রীদের পাশাপাশি তাদের স্বজনরা যেন সময়টুকু নির্বিঘ্নে কাটাতে পারেন, মূলত সে উদ্দেশ্যেই গত নভেম্বরে এ দুটি বিশেষ লাউঞ্জ চালু করা হয়। বিষয়টি প্রচারে বিভিন্ন স্থানে সাইনবোর্ড বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বলেন, লাউঞ্জ দুটি চালু হওয়ার পর থেকে ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। সবাই সন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন। বিষয়টি আরও প্রচারের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।