• সোমবার, ০২ জুন ২০২৫, ০৪:১৩ অপরাহ্ন

সিলেটে আরিফুল হক ও কয়েস লোদী দ্বন্দ্বে উত্তপ্ত বিএনপির রাজনীতি

স্টাফ রিপোর্টার / ৬ Time View
Update : শনিবার, ৩১ মে, ২০২৫

 

ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর পলাতক আওয়ামী লীগ নেতার দৈনিক পত্রিকা ‘দখল’, নিজের দপ্তরকে পত্রিকা অফিসে রূপান্তর, আওয়ামী লীগের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর ফোনকল পিএসকে দিয়ে ‘ভাইরাল’ করার পর এবার প্রধান অতিথির সঙ্গে মঞ্চে বসা সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদীর বক্তব্যের পর প্রকাশ্যে এসেছে সিলেটের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী ও নগর বিএনপির সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদীর ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব। দলের দায়িত্বশীল সিনিয়র এই দুই নেতার দ্বন্দ্বে উত্তপ্ত হয়ে পড়েছে সিলেটে বিএনপির রাজনীতি।

শুক্রবার (৩০ মে) সন্ধ্যায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সঙ্গে অনুষ্ঠানমঞ্চে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন কয়েস লোদী।

মঞ্চে এই দ্বন্দ্বের ভিডিও শুক্রবার রাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই আলোচনা সমালোচনা শুরু হয় সিলেটে।

মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির বলয়ের নেতা হিসেবে পরিচিত। আরিফুল হক ও খন্দকার আবদুল মুক্তাদিরের সিলেট বিএনপিতে প্রকাশ্যে। পাশাপাশি সিলেট সিটি করপোরেশনে যখন আরিফুল হক চৌধুরী মেয়র তখন সেই পরিষদে কাউন্সিলর ছিলেন রেজাউল হাসান কয়েস লোদি। তখন ভারপ্রাপ্ত মেয়র হওয়া নিয়ে তাদের দ্বন্দ্বের শুরু। তাই সিলেটে বিএনপির রাজনীতিতে আরিফুল হকের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবেও পরিচিত কয়েস লোদী।

জানা যায়, জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎবার্ষিকী উপলেক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আরিফুল হক চৌধুরী। এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রেজাউল হাসান কয়েস লোদি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘যার হাত ধরে বিএনপির প্রতিষ্ঠা হয়েছে তার শাহাদাৎবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সিলেট মহানগর বিএনপির ১০১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির প্রথম সারির কোনো নেতা নেই। এখানে তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা বসে আছেন। আজ যদি স্ট্যান্ডিং কমিটির কোনো মেম্বার আসতেন, তাহলে কমিটিতে নাম রাখার জন্য হল ভরে রাস্তা পর্যন্ত চলে যেতো। অত্যান্ত দুঃখ নিয়ে বলতে হচ্ছে এই যদি হয় অবস্থা, তাহলে সংগঠনের প্রতি আমাদের কর্তব্য কি? আমাদের দায়িত্ববোধ কোথায়। এখানে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আছেন অন্তত সাংগঠনিকভাবে আপনার একটা কিছু করেন।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যের পর সভাপতির বক্তব্য দিতে এসে রেজাউল হাসান কয়েস লোদি তার বক্তব্য ফেসবুকে লাইভ না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমরা প্রায়ই বলতে শুনি ৫ আগস্টের নেতা-কর্মী, আপনি ৫ আগস্টের আগে কোথায় ছিলেন। আরে ভাই, ৫ আগস্টের আন্দোলন ছিল মাত্র ১৫ দিনের। কিন্তু গত দেড় দশক থেকে আন্দোলন করেছে, যারা জেল-জুলুম নির্যাতন সহ্য করেছে, গত দেড় দশক থেকে যারা পঙ্গুত্ব বরণ করেছে, যারা চাকরি হারিয়েছেন, ব্যবসা হারিয়েছেন, মা-বাবা সন্তান হারিয়েছেন, তাদের কোনো মূল্যায়ন নেই? আপনি প্রধান অতিথি আপনি আমাদের উৎসাহ দেবেন।’

এ সময় আরিফ মঞ্চে বসে কয়েস লোদিকে উদ্দেশ্য করে বলেন ‘নো, নো’। এক পর্যায়ে চেয়ার থেকে ওঠে এসে বলেন, ‘এই শোনো, এই শোনো, আমি যে বক্তব্য দিয়েছি সেটার আলোকে কথা বলো। আমি কী বলেছি, পার্টির চেয়ারম্যানের….’।

এ সময় অনুষ্ঠানস্থলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

এ বিষয়ে জানতে মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদির মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলেও তিনি সাড়া দেননি।

এ বিষয়ে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘দলের প্রতিষ্ঠাতার শাহাদাতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে কেন গুরুত্বপূর্ণ নেতারা নেই, এ প্রসঙ্গে আমি বক্তব্য দিয়েছি। কয়েস লোদী অপ্রাসঙ্গিক বক্তব্য দেওয়া শুরু করলে উঠে গিয়ে তাকে বলেছি, আমি বক্তব্য দিলাম একটা, আর তুমি বলছো আরেকটা।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category