এবার রোজার প্রথম দিন থেকেই সিলেটে বেশ গরম অনুভূত হচ্ছে। তাই ইফতারে তরমুজের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজারেও রয়েছে প্রচুর তরমুজ। কিন্তু চড়া দামের কারণে সাধারণ মানুষের তরমুজ কেনা দুষ্কর হয়ে পড়ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সিলেট নগরীর আম্বরখানা, সুবিদবাজার, মদীনামার্কেট, আখালিয়া, টুকেরবাজার, রিকাবিবাজার, উপশহর, মেন্দিবাগ পয়েন্ট, শিবগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার বাজার সয়লাব তরমুজে। এসব এলাকায় আগে যারা সবজি বিক্রি করতেন তারাই এখন তরমুজ বিক্রি করছেন। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী তরমুজের জোগান থাকলেও চড়া দাম হাঁকান বিক্রেতারা। তাই কেউ কেউ দরদাম করে তরমুজ কিনছেন, আবার অনেকে দাম শুনে চলে যাচ্ছেন।
সিলেটের কদমতলী এলাকায় ফলের আড়তে গিয়েও দেখা যায় প্রচুর তরমুজ আছে। বেশ কয়েকজন আড়তদারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাঝারি সাইজের ১০০ পিস তরমুজ বিক্রি করছেন ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকায়। বড় সাইজের ১০০ পিস তরমুজ বিক্রি করছেন ১৮ থেকে ১৯ হাজার টাকায়। ওই হিসাবে মাঝারি সাইজের প্রতি পিস তরমুজের দাম পড়ে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। বড় সাইজের এক পিস তরমুজের দাম পড়ে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা। কিন্তু খুচরা বাজারে ক্রেতাদের একটি ছোট সাইজের তরমুজ কিনতে হচ্ছে সর্বনিম্ন ২০০ টাকায়। মাঝারি সাইজের তরমুজের দাম ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। বড় সাইজের তরমুজের দাম রাখা হয় ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা।
গরমের কারণে সবাই ইফতারে এক টুকরো তরমুজ রাখতে চান। তাই সুযোগ বুঝে খুচরা বিক্রেতারা তরমুজের চড়া দাম হাঁকাচ্ছেন বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। সিলেট নগরীর শাহী ঈদগাহ এলাকার তানভীর আহমদ বলেন, ‘রমজানের চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে সিলেট নগরীতে তরমুজের দাম ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে দিয়েছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। এখন তরমুজের সিজন শুরু হয়েছে। তাই তুলনামূলক দাম কম হওয়ার কথা। কিন্তু এখন ছোট সাইজের একটি তরমুজ কিনতে হচ্ছে ২০০ টাকায়। তাই এ ব্যাপারে খুচরা বাজারে প্রশাসনের অভিযান পরিচালনা দরকার।’
সিলেট নগরীর হাওয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা আফজল হোসেন বলেন, ‘সারা শহরে যেদিকে তাকাই শুধু তরমুজ আর তরমুজ। কোনো জিনিস বাজারে বেশি থাকলে তার দাম কম থাকার কথা। কিন্তু এই রমজানে সিলেটে তরমুজের বাজারে হয়েছে উল্টো। বাজারে তরমুজ যেমন বেশি দামও তেমন বেশি। একটি বড় সাইজের তরমুজ দাম চাচ্ছে ৮০০ টাকা। আবার ছোট তরমুজ নিলে আমার হবে না কারণ আমার পরিবারে সদস্য বেশি। তাই আর তরমুজ কিনিনি।’
এদিকে তরমুজের চাহিদা অনুযায়ী জোগান থাকার পরও কেন তরমুজ চড়া দামে বিক্রি করছেন এ প্রশ্নের উত্তর দিতে নারাজ খুচরা বিক্রেতারা। বেশ কয়েকজন বিক্রেতা বলেন, ‘দাম কেন বেশি বলা যাবে না। এই দামে তরমুজ নিতে পারলে আসেন।’
সিলেট বিভাগীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আরিফ মিয়া বলেন, ‘আমরা প্রথম রমজান থেকে সয়াবিন তেল নিয়ে বাজার মনিটরিংয়ে ছিলাম। এরপর লেবু নিয়ে কাজ করেছি। তরমুজের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি আমাদের নজরে আসেনি। তবে এখন যেহেতু জেনেছি। এ বিষয়ে আমরা বাজার মনিটরিং করব।’