স্বামী-সন্তানসহ স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চান একাত্তর টিভির সাবেক প্রধান প্রতিবেদক ফারজানা রুপা। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুজ্জামানের আদালতে মিরপুর থানার এক মামলায় গ্রেফতার দেখানোর শুনানিতে তিনি এ আকুতি জানান।
ফারজানা রুপার স্বামী একাত্তর টিভির চাকরিচ্যুত সাংবাদিক সাকিল আহমেদ।
শুনানিকালে আদালতের কাছে কথা বলার অনুমতি চান ফারজানা রুপা। বিচারক তাকে আইনের ভেতরে থেকে কথা বলার অনুমতি দেন।
অনুমতি পেয়ে রুপা কাঠগড়ার সামনের দিকে এগিয়ে গিয়ে বলেন, ‘আমার ছোট্ট শিশু সন্তান আছে। আমি আর আমার স্বামী দুজনই কারাগারে। ছয় মাস হয়ে গেছে। আমাকে জামিন দিন। আমরা স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরতে চাই।’
শুনানি শেষে বিচারক ফারজানা রুপা ও সাকিল আহমেদকে গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেন।
এর আগে, আজ সকাল সাড়ে ৯টায় প্রিজন ভ্যানে কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয় ফারজানা রুপাকে। এরপর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজতখানায় নারীদের সেলে রাখা হয় তাকে।
একইভাবে সকালে কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে সাকিল আহমেদকে আদালতে হাজির করা হয়। হাজতখানার পুরুষ সেলে রাখা হয় তাকে। আলাদা সেলে রাখায় প্রথমে দেখা হয়নি এই সাংবাদিক দম্পতির।
কিছুক্ষণ পর মিরপুর থানার এক মামলায় গ্রেফতার দেখানোর শুনানিতে হাজির করতে প্রস্তুত করা হয় রুপাকে। হাতে হাতকড়া, গায়ে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও মাথায় হেলমেট পরানো হয় তাকে। এরপর রুপাকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, দেশটিভির ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আরিফ হাসানের সঙ্গে সারিবদ্ধভাবে এজলাসে তোলা হয়।
এজলাসে ঢুকে কাঠগড়ায় ওঠার পরেই রুপা তার স্বামী সাকিল আহমেদকে খুঁজতে থাকেন। কিন্তু দেখা না মেলায় উদ্বিগ্ন দেখা যায় তাকে। কয়েক মিনিট পর সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেননের সঙ্গে হাজতখানা থেকে সাংবাদিক সাকিলকে এজলাসে তোলা হয়। সাকিল কাঠগড়ায় উঠতেই আপ্লুত হন রুপা। তারা আলাপ করতে থাকেন। কখনও কানে কানে, কখনও হাসিমুখে গল্প করতে থাকেন তারা। কাঠগড়ায় যতক্ষণ ছিলেন, কথা বলেছেন তারা।
পরে তাদের গ্রেফতার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করা হয়। তাদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাকিল বলেন, ‘কথা বলতে মানা। মুখ বন্ধ আমাদের।’