• বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৩৩ অপরাহ্ন

৯ কোটি টাকার গ্রাউন্ড ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট অকার্যকর

সামিয়ান হাসান / ১৬৪ Time View
Update : সোমবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৪

বিয়ানীবাজার পৌরসভার নাগরিকদের বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে প্রায় ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপন করা হয়েছে একটি পানি শোধনাগার। কিন্তু গ্রাহকের অভাবে এখনো অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে আট কোটি ৯০ লাখ টাকার এ পানি শোধনাগার। নিয়মিত ব্যবহার না হওয়ায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এর বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। এমন পরিস্থিতিতে পানি শোধনাগার রক্ষায় বিপাকে পড়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি সারাদেশের ন্যায় বিয়ানীবাজার পৌরসভার মেয়রকেও অপসারণ করা হলে পৌর প্রশাসকের দায়িত্ব পান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী শামিম। দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন তিনি।


জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বিয়ানীবাজারসহ দেশের ৪০টি পৌরসভায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। এ প্রকল্পের আওতায় বিয়ানীবাজার পৌরসভায় গ্রাউন্ড ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১৮ সালের জুনে ফতেহপুর এলাকার ১ একর জায়গার উপর লোলাখালের কাছে পানি শোধনাগার স্থাপনের কাজ শুরু করে পৌর কর্তৃপক্ষ। কয়েক দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে প্রকল্পের কাজ শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যানটি বুঝিয়ে দিলেও প্রায় ৪৫ হাজার পৌরবাসীর কোনো কাজেই আসছে না এটি। তবে এক্ষেত্রে পৌরবাসীর অনাগ্রহকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা।


তবে পৌরসভার নাগরিকদের দাবি, প্রতিটি বাড়িতে টিউবওয়েল রয়েছে। কোথাও পানির অভাব নেই। অযথা অতিরিক্ত খরচে আগ্রহী নয় পৌরবাসী। যে কারণে সংযোগ নিতে চাচ্ছেন না তারা।
পৌরসভার ফতেহপুর গ্রামের বাসিন্দা জয়নাল উদ্দিন বলেন, আমাদের পুকুর এবং খাবার পানি সরবরাহের জন্য বিশুদ্ধ টিউবওয়েল রয়েছে। হাড়ি পাতিল দোয়ার কাজ পুকুরে করা যায় তাই অযথা মাসে টাকা দিয়ে পৌরসভার কাছ থেকে পানির লাইন নেয়ার প্রয়োজন নেই।


পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত কসবা গ্রামের বাসিন্দা ও প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মিলাদ মোহাম্মদ জয়নুল ইসলাম বলেন, এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনার অভাবকে দোষারোপ করছেন। তিনি বলেন যে সকল এলাকায় বিশুদ্ধ পানির জন্য টিউবওয়েল এবং একটি গ্রামে একাধিক পুকুর রয়েছে সেইসব জায়গায় আপতত পানির লাইন দেয়ার কোন প্রয়োজন ছিল না। এখানে সরকারের টাকা অপচয় করার কোন মানে নেই। প্রাথমিক সমীক্ষা করে প্রাথমিক পর্যায়ে শহরের আসপাশের এলাকায় পানির লাইন সরবরাহ করলে বাসা-বাড়িতে কিংবা রেস্টুরেন্টে এই পানির লাইন সংযোগ দিলে এখন কর্তৃপক্ষকে ভর্তুকি দিতে হতো না।


এদিকে পৌরশহরের ভাড়া বাসায় বসবাসকারীদের মধ্যে প্রায় ২০০টি সংযোগ দেওয়া হয়েছে। শহরের ২২ কিলোমিটার এলাকায় পাইপলাইন বসানোর কাজ শেষ হয়েছে বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং পৌর প্রশাসক কাজী শামীম বলেন, যত দ্রুত সম্ভব আমরা সরকারের কাছে এই ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যানটির বিষয়ে প্রতিবেদন পাঠাবো। সরকার পরবর্তীতে যে সিদ্ধান্ত দিবে আমরা সেই আলোকে কাজ করার চেষ্টা করবো।


বিয়ানীবাজার পৌরসভার প্রধান নির্বাহী আশরাফুল ইসলাম বলেন, পৌর এলাকায় ২শত কিলোমিটার মূল রাস্তা রয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে শহেরর নিকটবর্তী ২২ কিলোমিটার এলাকায় পানি সরবরাহের জন্য পাইপ লাইন বসানো হয়েছে। আমাদের টার্গেট ছিল ভবিষ্যতে পুরো পৌরসভার সকল ওয়ার্ডে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করবো যাতে সকল নাগরিক এই সুবিধা পায়। তিনি বলেন, এই পর্যন্ত ২শ টি সংযোগ দেয়া সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে ভর্তুকি দিয়ে এই প্রকল্পটি চালু রাখা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category