• বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩৮ অপরাহ্ন

ঈদের কেনাকাটায় শপিংমল গুলোতে নারী চোরদের উপদ্রবে অসহায় ক্রেতা

সামিয়ান হাসান / ২৩ Time View
Update : সোমবার, ২৪ মার্চ, ২০২৫

নারী চোরদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে বিয়ানীবাজার পৌরশহর। ঈদের মৌসুমে তাদের আনাগোনা আরোও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। গত কয়েক বছর থেকে প্রায় প্রতি সপ্তাহে এখানকার বিপনী বিতানগুলোতে নারী চোরদের আটক করা হচ্ছে। একটি সংগবদ্ধ চক্র নারীদের এ কাজে লাগিয়ে ফায়দা নিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নারী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা নেয়াও সম্ভব হয়না।

সোমবার বিয়ানীবাজার পৌরশহরের একটি বিপনী বিতানে জকিগঞ্জ এলাকার এক নারীকে চুরির অপরাধে আটক করা হয়। এর আগে গত ফেব্রুয়ারীতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বর্ণ ছিনতাইকালে আরো দুই নারীকে আটক করেন স্থানীয় জনতা।

জানা যায়, নারী চোররা সাধারণত বোরকা পরা অবস্থায় একাধিক হাত ব্যাগ সাথে নিয়ে বিপনী বিতানগুলোতে ঘুরে বেড়ায়। তাদের কারো সাথে শিশুরাও থাকে। একপর্যায়ে তারা সুযোগ বুঝে ব্যস্ত দোকানে ঢুকে পণ্য দামাদামি শুরু করে। দোকানী কখনো অন্যমনষ্ক হলে নিমিষেই পছন্দের পণ্য সাথে থাকা ব্যাগে ভরে নেয় তারা। পৌরশহরের কাপড়, জুতা, কসমেটিকস আর স্বর্ণের দোকানে তাদের চোখ থাকে বেশী। একটি বিপনী বিতানের কসমেটিকস ব্যবসায়ী জাকারিয়া আহমদ জানান, বোরকা-হিজাব পরা নারীরা ক্রেতা হিসেবে দোকানে প্রবেশ করে। দামদরের একপর্যায়ে তারা তা চুরি করে নিয়ে যায়। পাশের আরেকটি বিপনী বিতানের ব্যবস্থাপক মুকিত মোহাম্মদ জানান, ঈদের বাজারে দোকানগুলোতে নিয়মিত চুরির খবর পাওয়া যায়। নারী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া কঠিন হয়ে পড়ে। অনেক সময় রাতেও তাদের আনাগোনা দেখা যায়।

ব্যবসায়ীরা জানান, কেবল নারী চোর ঠেকাতে পৌরশহরের অভিজাত বিপনীবিতানের দোকানগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। এরপরও তাদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছেনা। নারী চোরদের আটক করার পর তারা নাম-ঠিকানা ভূলভাবে সরবরাহ করে। অভিভাবকদের ডাকতে বললে তারা ঘন্টার পর ঘন্টা চুপচাপ বসে থাকে। তখন ব্যবসা বন্ধ রেখে চোরের তথ্য নেয়ার চেয়ে দ্রুত তাকে সরিয়ে দেয়াই ভালো মনে করেন ব্যবসায়ীরা। নারীদের আটক করে আইনশৃংখলা বাহিনীও বাড়তি বিড়ম্বনায় পড়তে চায়না ব্যাবসায়ীরা।

সূত্র জানায়, নারী চোররা ২-৩ জন করে টার্গেট করা দোকানে প্রবেশ করে। যথেষ্ট স্মার্টলি কথা বলে তারা। কোন সময় ওই দোকানের টিনেজ সেলসম্যানকে ম্যানেজ করতে বিশেষ কৌশল ব্যবহার করে। উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকার নারীদের পাশাপাশি বহিরাগত অনেক নারী চোর নতুন করে এই পেশায় নেমেছেন। তারা কখনো ভিক্ষাবৃত্তি আবার কখনো সহজ-সরল নারীদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা স্বর্ণালঙ্কার হাতিয়ে নেয়। স্বর্ণ চুরির কবলে পড়া এক জুয়েলারী ব্যবসায়ী জানান, তার দোকান থেকে দেড় ভরি ওজনের স্বর্ণের নেকলেছ নিয়ে যায় দুই তরুনী। পরে সিসিটিভি ক্যামেরায় বিষয়টি ধরা পড়লে ওই তরুণীদের অভিভাককরা এসে তা দিয়ে গেছেন। যদিও তাদের বাড়ি ছিল বিয়ানীবাজার এলাকার মধ্যে। বাইরের হলে তা পাওয়া যেতনা।

বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশরাফ উজ্জামান বলেন, চুরির দায়ে নারীরা আটক হলেও সংশ্লিষ্টরা তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে চায়না। কেউ মামলা না করলে পুলিশের কী করার আছে। তবে ঈদের সময়ে দোকানে আসা সকল ক্রেতাদের দিকে বাড়তি খেয়াল রাখার তাগিদ দেন তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category