• বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:১১ পূর্বাহ্ন

বেতন-বোনাসের অপেক্ষায় কয়েক লাখ শ্রমিক

স্টাফ রিপোর্টার / ২১ Time View
Update : বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫

তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম অঞ্চলের ২ হাজার ১০৭টি চালু কারখানার মধ্যে ১০ শতাংশ, নিট পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সদস্যভুক্ত ৬১৩ কারখানার মধ্যে ২৪ শতাংশসহ মোট ৩৫ শতাংশ শ্রমিক এখনও ঈদের বোনাস পাননি। উভয় সংগঠনের হিসাব মতে, পোশাক শিল্পের সঙ্গে ৪০ লাখ শ্রমিক জড়িত। এই দুই সংগঠনেরই ৩৫ শতাংশ অর্থাৎ ১৪ লাখ শ্রমিক এখনও বোনাস পাননি। এর বাইরেও ক্ষুদ্র-মাঝারি খাতের অধিকাংশ কারখানার শ্রমিক ঈদ বোনাস পাননি বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত ২৪৫ কারখানায় বেতন-বোনাস নিয়ে সমস্যা রয়ে গেছে। যদিও সমাধানের চেষ্টা চলছে। কবে মালিকদের সময়-সুযোগ হবে, সেই অপেক্ষায় রয়েছেন তারা।

এদিকে ২৭ মার্চের মধ্যে শ্রমিকদের বেতন বোনাস পরিশোধের সময় বেঁধে দিয়েছে সরকার। তবে এই পদক্ষেপ সরকারের পক্ষ থেকে আগে নেওয়া উচিত ছিল বলে মনে করছেন শ্রমিক নেতারা। তারা বলেছেন, আগে ভাগে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো দিন তারিখ নির্দিষ্ট না থাকায় মালিকরা সুযোগ নিয়েছেন। আগের মতোই মালিকরা যে যার মতো করে বেতন-বোনাস দিচ্ছেন। গত বছর নির্দিষ্ট সময় না থাকায় মালিকরা ছুটির দিন পর্যন্ত সময় নিয়েছে। এবারও একই পথে হাঁটতে শুরু করেছেন মালিকরা। শ্রমিক নেত্রী জলি তালুকদার বলেছেন, সরকার কঠোর হলে মালিকরা নয়ছয় করতে পারতেন না।

বিজিএমইএ জানিয়েছে, সংগঠনটির সদস্যভুক্ত দেশের ৯০ শতাংশ পোশাক কারখানায় ঈদ বোনাস দেওয়া হয়েছে। তারা বলেছে, ঈদ বোনাস পরিশোধ হয়েছে ৯০.১৮ ভাগ কারখানায়। ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন পরিশোধ হয়েছে ৯৮.৮৬ ভাগ কারখানায়। এ ছাড়া মার্চ মাসের ১৫/৩০ দিনের বেতন ৯.৪৪ ভাগ কারখানায় দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে সংগঠনটি। গতকাল ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিজিএমইএভুক্ত সব কয়টি কারখানা চালু ছিল। বন্ধ রয়েছে তিনটি কারখানা।

বিজিএমইএর দাবি, ঢাকা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের কারখানাগুলোর মধ্যে জানুয়ারি মাসের বেতন পরিশোধ হয়েছে ৯৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ কারখানায়। ফেব্রুয়ারি মাসে পরিশোধ হয়েছে ৯৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ, ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন প্রদান অব্যাহত আছে। এ ছাড়া কোনো কোনো কারখানায় মার্চ মাসের বেতনও পরিশোধ করেছে। মার্চ মাসের বেতন পরিশোধ হয়েছে ৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ কারখানায়।

এদিকে বিজিএমইর সদস্যভুক্ত কারখানাগুলোর মধ্যে ২৪৫টি কারখানায় সমস্যা হতে পারে- এমন তথ্য দিয়েছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা ও বিজিএমইএ। এই কারখানাগুলোর তালিকা এরই মধ্যে শ্রম মন্ত্রণায় পাঠানো হয়েছে।

জানা গেছে, পর্যায়ক্রমে ঈদের ছুটি দেবে কারখানাগুলো। ২৬ তারিখ থেকে পর্যায়ক্রমে ২৯ মার্চ পর্যন্ত ঈদের ছুটি দেবে কারখানাগুলো।

এদিকে বিকেএমইএর সদস্যভুক্ত চলমান ৬১৩ কারখানার মধ্যে ঢাকা, নারায়নগঞ্জ ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৯৯ দশমিক ০৯ শতাংশ কারখানায় বেতন পরিশোধ হয়েছে। এ ছাড়া মার্চ মাসের বেতন হয়েছে ৪৬ দশমিক ৮১ শতাংশ কারখানায়। অন্যদিকে ঈদের বোনাস হয়েছে ৭৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ কারখানায়।

বিকিএমইএর নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, বিকেএমইএর সদস্যভুক্ত কারখানাগুলোর মধ্যে অকিাংশ কারখানায় বেতন বোনাস পরিশোধ হয়েছে। যেসব কারখানা এখনও পরিশোধ করেনি, আশা করা যায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই পরিশোধ হবে।

বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, সব কারখানার সক্ষমতা এক না। কারও অবস্থা ভালো আছে, কারও অবস্থা খারাপ। তবে বিগত দিনের হিসাব মতে, দু-চারটি কারখানা ছাড়া সবগুলোই ঈদের আগেই বেতন-বোনাস পরিশোধ করেছে। আশা করি এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না। তবে রাস্তায় না নেমে শ্রমিকদের একটু ধৈর্য ধরে মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করার অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, আন্দোলনের কারণে কারখানা বন্ধ থাকলে সবারই সমস্যা। এই প্রভাব পড়বে আবার আগামী দিনে। তাই রাস্তায় না নেমে, আন্দোলন করে কারখানা বন্ধ করে কাজ না করলে সমস্যা আরও সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category