• শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ১১:০৬ অপরাহ্ন

সিলেট সীমান্তে কারফিউ জারি করল ভারত

ডেস্ক রিপোর্ট / ২ Time View
Update : শনিবার, ১০ মে, ২০২৫

সিলেট সীমান্তে রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করেছে ভারত। দেশটির মেঘালয় রাজ্যের পূর্ব জয়ন্তিয়া হিলসের জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সই করা এক আদেশে সীমান্তে এই কারফিউ জারি হয়। প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত এই কারফিউ বলবৎ থাকবে। সীমান্তে অনুপ্রবেশ, চোরাচালান ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঠেকাতে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে আদেশে বলা হয়।

শুক্রবার (৯ মে) সন্ধ্যায় সীমান্তে ভারতের রাত্রিকালীন কারফিউ জারির তথ্য নিশ্চিত করেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ। তিনি বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে গোয়াইনঘাট সীমান্তে ওরা এটি করেছে। এটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ওখানকার ডিএম (জেলা ম্যাজিস্ট্রেট) বিষয়টি জানিয়েছেন। রাতে সীমান্তে আমাদের কোনো কাজই নেই।’

বিজিবি ১৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. জুবায়ের আনোয়ার বলেন, ‘আমরা অফিসিয়ালি কোনো তথ্য পাইনি। তবে গোয়েন্দা তথ্যসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। আমরা সীমান্তবর্তী এলাকার ইউপি মেম্বারদের মাধ্যমে স্থানীয় বাসিন্দাদের সচেতন করার কার্যক্রম শুরু করেছি। কেন তারা এমনটি করল, সেটি আমরা জানারও চেষ্টা করছি।’

ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পূর্ব জয়ন্তিয়া হিলস জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শিবাংশ আরস্থির সই করা আদেশে বলা হয়, পূর্ব জয়ন্তিয়া হিলস জেলার আন্তর্জাতিক সীমান্ত এখনো সম্পূর্ণভাবে বেড়া দিয়ে ঘেরা নয়। এ কারণে এই অঞ্চলে অবৈধ অনুপ্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, চোরাকারবারি ও অবাঞ্ছিত অনুপ্রবেশকারীরা রাতের আঁধারে সীমান্ত অতিক্রম করে অবৈধ কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হতে পারেন। এই পরিস্থিতিতে ৮ মে থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রাত্রিকালীন কারফিউ থাকবে। আন্তর্জাতিক সীমান্তের শূন্যরেখা থেকে ৫০০ মিটার এলাকাজুড়ে এই কারফিউ থাকবে। কারফিউয়ের সময়সীমা প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত।

কারফিউ চলাকালে কিছু বিষয় সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এগুলো হলো আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ বা অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের উদ্দেশ্যে চলাফেরা, পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির অবৈধ জমায়েত, অস্ত্র, লাঠি, রড, পাথরসহ অন্যান্য অস্ত্রোপযোগী বস্তু বহন, গবাদিপশু, চোরাচালান পণ্য, সুপারি, পানের পাতা, শুকনো মাছ, বিড়ি, সিগারেট, চা পাতা ইত্যাদি পাচার।

আদেশে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সীমান্ত এলাকা সম্পূর্ণরূপে বেড়াবিহীন হওয়ায় এটি চোরাচালানকারী, অবৈধ অনুপ্রবেশকারী ও নিষিদ্ধঘোষিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্যদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ প্রবেশপথে পরিণত হয়েছে। ফলে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কারফিউয়ের আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে।

এদিকে মেঘালয় সরকারের সূত্রের বরাতে ভারতীয় গণমাধ্যম এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

এতে বলা হয়, মেঘালয় সরকার ইস্ট খাসি হিলস, ওয়েস্ট জয়ন্তিয়া হিলস ও ইস্ট জয়ন্তিয়া হিলস জেলায় রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করেছে। সীমান্তবর্তী এই এলাকাগুলোতে এখনো পূর্ণাঙ্গভাবে কাঁটাতারের বেড়া নেই। এ কারণে চোরাকারবারি, নিষিদ্ধ জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্য এবং অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের অনুপ্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে রাতের বেলায় এই ধরনের অবৈধ তৎপরতা বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এসব কারণে সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category