• মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ০৭:৪৬ পূর্বাহ্ন

জলাবদ্ধতার শহর বিয়ানীবাজার, পৌরসভার পরিকল্পনার অভাব

সামিয়ান হাসান / ৪৩ Time View
Update : বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫

পৌরসভার সঠিক পরিকল্পনার অভাবে জলাবদ্ধতার শহরে পরিণত হয়েছে বিয়ানীবাজার। প্রবাদ আছে বর্ষা মৌসুম মানেই বিয়ানীবাজারে জলাবদ্ধতা। কিন্তু এখনো বর্ষা মৌসুম আসার আগেই সম্প্রতি যে কয়েকদিন বৃষ্টি হয়েছে, তাতেই ডুবে গেছে বিয়ানীবাজার পৌরশহরের বিভিন্ন এলাকা। গত কয়েক বছর ধরে বিয়ানীবাজার পৌরশহরে এমন অবস্থার সৃষ্টি হলেও তাতে কারো গরজ নেই।

পৌরবাসী অনেকেই জানান, সামান্য বৃষ্টিতে বিয়ানীবাজারের অলিগলি ও প্রধান সড়কের বিভিন্ন অংশ পানির নিচে তলিয়ে যায়। বৃষ্টি একটু দীর্ঘ সময় স্থায়ী হলে রীতিমতো ডুবে যায় পৌরশহর। হাঁটু সমান পানিতে নাকাল হতে হয় বাসিন্দাদের। অথচ প্রতি বছরই জলাবদ্ধতা নিরসনে বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দেয় সরকার। বছর বছর অর্থ বরাদ্দের পরিমাণও বাড়ে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। ক্ষেত্রবিশেষ ভোগান্তির পরিমাণ বাড়ে। বছরের পর বছর জলাবদ্ধতা নিরসনে বহু প্রকল্প ও পদক্ষেপ হাতে নিয়ে প্রচুর অর্থ খরচ করেছে বিয়ানীবাজার পৌরসভা। কিন্তু ফল ছিল শূন্য।

প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে বিয়ানীবাজারের সিংহভাগ এলাকা ডুবলেও নির্দিষ্ট কিছু এলাকা বেশি জলাবদ্ধতার স্থান বা হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এরমধ্যে খাসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সম্মুখ, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনা, চাউল গলি, ইনার কলেজ রোড, সুপাতলা, খাসাড়িপাড়া, শাহপরান রোড উল্লেখযোগ্য। সূত্র জানায়, বিয়ানীবাজার পৌরসভায় মোট ২৮ কি. মি ড্রেনেজ ব্যবস্থা রয়েছে।

বিয়ানীবাজার দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সম্পাদক হাসান শাহরিয়ার বলেন, জনপ্রতিনিধিরা উন্নয়নের নামে ঢালাও দূর্নীতি করেন। বছরের পর বছর গেলেও জলবদ্ধতা নিরসন করতে পারেননা তারা। পৌরশহরের ড্রেনগুলো পরিষ্কার এবং পানি নিষ্কাশনের উপযোগী করলে জলাবদ্ধতা থেকে কিছুটাও হলেও আমরা মুক্তি পেতাম।

বৃষ্টি হলেই বিয়ানীবাজার পৌরশহরের বিভিন্ন এলাকার ড্রেনের নোংরা পানি উপচে উঠে সড়ক ডুবে যায়। পরে এসব নোংরা পানি বিভিন্ন দোকানপাটে প্রবেশ করে। এই পানি নামতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে। এ সময় নোংরা পানি ঠেলেই চলাচল করেন পৌরবাসী। খাসা এলাকার বাসিন্দা ফার্মেসী ব্যাবসায়ী আবুল হাসান জানান, দীর্ঘদিন ধরেই শহীদ টিলা এলাকার ড্রেনগুলো পরিষ্কার করা হয়নি। ড্রেনগুলো পরিষ্কার না করায় তা ভরাট হয়ে পানি নিষ্কাশনের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় সামান্য বৃষ্টিতে দোকান, সড়ক ও অলিগলি পানিতে থইথই হয়ে যায়। এতে মানুষকে পচা, দুর্গন্ধযুক্ত, ময়লা-আবর্জনা মেশানো পানি মাড়িয়ে চলাফেরা করতে হয়।

পৌরশহরের বাসিন্দা আবু বলেন বক্কর জিবান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে তলিয়ে যায় পৌরসভার নানা এলাকা। বিভিন্ন এলাকা বৃষ্টির পানিতে থইথই করে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কাজের কাজ কিছুই করে না। টমমটম চালক শাকিল আহমদ বলেন, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় কতবার মেশিন বিকল হয়ে পড়েছে, তার ইয়ত্তা নেই। বাধ্য হয়ে রাস্তা দিয়ে ঠেলে নিয়ে যেতে হয়েছে। সবার মতো আমরাও চাই বিয়ানীবাজার জলাবদ্ধতামুক্ত হোক।

বিয়ানীবাজার পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিকুঞ্জ ব্যনার্জি বলেন, পৌর এলাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কারে আমাদের কাজ চলমান। সমবায় মার্কেটের সম্মুখ, পিএইচজি স্কুলের মাঠের প্রধান ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কারে কাজ চলছে। ধারাবাহিক এ কর্মসূচিতে সফলতা আসবে বলে মনে করেন তিনি।

বিয়ানীবাজার পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম মুস্তফা মুন্না বলেন, পৌরসভার অধীনে থাকা সমস্ত ড্রেনেজ পরিস্কার করার কাজ চলছে। যাতে বর্ষা মৌসুমে ড্রেনের ভেতর পানি আটকে গিয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি না হয়। আশা করছি মৌসুমের আগেই কাজ শেষ হয়ে যাবে এবং পৌরবাসী জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category