• বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪৯ অপরাহ্ন

কমিটি নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দ্বন্দ্ব, একাধিক সংঘর্ষ

ডেস্ক রিপোর্ট / ৬৩ Time View
Update : শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০২৫

কোটাবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব ও শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটিয়ে আলোচনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এরপর সারা দেশে কমিটি গঠন করে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠে সংগঠনটি। কিন্তু সেই কমিটির দ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা। শুধু রাজধানীতে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, এমন নয়। তৃণমূলেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের মধ্যে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন সংগঠনটির নেতারা।

তবে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা জানান, অভ্যন্তরীণ অশান্তির বহিঃপ্রকাশ যা একটি অপ্রীতিকর অবস্থার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, যা সংগঠনের জন্য শোভনীয় নয়। এ বিষয়ে তারা সতর্ক আছেন। কারা কী উদ্দেশ্যে বিভাজন করতে চাচ্ছে, সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে।

বৈষম্যবিরোধী নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থান আন্দোলনে যারা মাঠে ছিল এবং নিহত ও আহত হয়েছে তাদের পরিবারের পাশাপাশি ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, শিবির পরিবারের সদস্যরাও কমিটিতে যুক্ত হয়েছে। আন্দোলনে যারা সম্মুখসারিতে ছিল, তাদের সাইট করে বিভিন্ন দল থেকে আসা ব্যক্তিরা গ্রুপিং করে চলাফেরা করে। ভিন্ন মতাদর্শের বলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের মধ্যে এক ধরনের বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। এমনকি যাদের পরিবার কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল না এবং বৈষম্যবিরোধী থানা কমিটির মধ্যে কোনো গ্রুপিংয়ে যুক্ত নয় তাদের ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, শিবির, ছাত্র অধিকার পরিষদের ট্যাগ দিয়ে হেনস্তা করা হচ্ছে। এই নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটিতে বিভিন্ন সময় অভিযোগ দেওয়া হলেও কোনো সুফল পাওয়া যায়নি বলে জানানো হয়। এসব দ্বন্দ্বের কারণেই বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষের মতো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে।

বৈষম্য দূর করার কর্মে সুনাম কুড়ালেও সাম্প্রতিক একাধিক সংঘর্ষের ঘটনায় বৈষম্যবিরোধীরা নতুন করে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে বলে মনে করেছেন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা।

গত ২৪ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি গঠন নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে ছয়জন আহত হন এবং গত ১০ জানুয়ারি রাজধানীর বাংলামটরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মিরপুর থানার কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বে দুপক্ষের সংঘর্ষে তিনজন আহত হন। এরপর গত মঙ্গলবার বিকেল রাজধানীর বাংলামটরে রূপায়ণ ট্রেড সেন্টারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কার্যালয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে দুই নারীসহ আটজন আহত হওয়ার ঘটনায় নতুন করে আলোচনায় বৈষম্যবিরোধীরা।

মঙ্গলবার রাজধানীর বাংলামটরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কার্যালয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের ব্যাডমিন্টন খেলার মাঠে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে জুলাই আন্দোলনে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির (আইইউবিএটি) সহ-সমন্বয়ক তানযীদ মোহাম্মদ সোহরাব রেজা প্রধান উপদেষ্টার কাছে বিচার না চেয়ে থানায় গিয়ে মামলা করার কথা বলেন এবং মামলা করতে কেউ বাধা দিলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলারও হুমকি দেন।

সোহরাব রেজা বলেন, আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিটিংয়ের জন্য বসতে বলা হয়। আমরা বোরহানউদ্দিন কলেজে বসতে চেয়েছি । আসার কথা কেন্দ্রীয়
সমন্বয়কদের; কিন্তু এসেছিলেন আন্দোলনের সেল সম্পাদক জাহিদ, স্বাস্থ্য কমিটির তরিকুল, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী কমিটির মুন্না। পরে আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে নারাজ হই এবং সেই বৈঠক হয়নি। আমরা এখন আইনিভাবে লড়াই করে যাব।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক বাকের মজুমদার বলেন, বাংলাদেশে আগে যেমন বিভাজন রাজনীতি ছিল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ক্ষেত্রেও কিছু মানুষ বিভাজন তৈরি করার চেষ্টা করছে। এই সংগঠনকে বিতর্কিত করার জন্য অনেকেরই হীন পরিকল্পনা আছে। সেই পরিকল্পনাই মাঠে গড়াচ্ছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) কাদের চন্দ্র বলেন, এ ধরনের মারামারি সংগঠনের জন্য অশোভনীয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি) মো. শাকিল বলেন, জুলাই আন্দোলনের পেছনে দাঁড়িয়ে জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে প্রতারণা করছে কিছু লোক। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নিবেদিত নেতাদের ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, শিবির, ছাত্র অধিকার পরিষদের ট্যাগ লাগানো হচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category