• মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১০ পূর্বাহ্ন

পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে বিয়ানীবাজার মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয়

সামিয়ান হাসান / ২১ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫

পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে বিগত কয়েক বছর পূর্বে আধুনিকভাবে নির্মিত ৩ তলা বিশিষ্ট বিয়ানীবাজার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন। কমপ্লেক্সটি নির্মিত হওয়ার পর থেকে এই ভবনটি ছিল উপজেলা আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয়। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ভবনটি নির্মিত হলেও তাদের কার্যক্রমের চেয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে এই ভবনটি বেশী ব্যবহৃত হয়েছে বলে বিরোধী রাজনীতিক নেতাকর্মীদের অভিযোগ। আওয়ামীলীগ ও সহযোগি সংগঠনের অঘোষিত কার্যালয় হিসেবে এই ভবনটি ব্যবহারের কারণে বীর মুক্তিযোদ্ধাগনের যাতায়াত সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। অতি রাজনীতিকরণের ফলে বিয়ানীবাজার পৌরশহরের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের নিজস্ব ঠিকানায় বসতে অনীহা প্রকাশ করতেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

তাছাড়া নির্বাচন না হওয়ায় বিগত সাড়ে ৭ বছর থেকে অকার্যকর হয়ে পড়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণের ক্যাম্পাস মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্স ভবন। নির্বাচিত কমিটি না থাকায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেই কোনো কার্যক্রম। প্রশাসনিকসহ যতটুকু কার্যক্রম রয়েছে তাও চলছে সরকারি কর্মকর্তাদের দিয়ে। বিয়ানীবাজারে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যক্রম পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অফিসে প্রয়োজন ছাড়া না যাওয়ায় অধিকাংশ সময় তালাবদ্ধ থাকে কার্যালয়। ফলে এক সময়ের জমজমাট এই সংগঠনটি ক্রমেই অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে রূপ নিচ্ছে। নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধাগণ না আসায় এবং কোনো কার্যক্রম না থাকায় অনেকটা ভূতুড়ে প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছে সংগঠনটি। ভবনের অধিকাংশ রুমের দরজা-জানালা ভাঙা।

সরজমিন প্রায় তিন ঘণ্টা অবস্থান করেও দেখা মিলেনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার। কোনোদিন হাতেগোনা দুই-এক মুক্তিযোদ্ধা এলেও তাদের পরামর্শ দেওয়ারও কেউ নেই।

সর্বশেষ ২০২৩ সালের ১৩ মে সারা দেশে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছিল ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু পরবর্তীতে সেই নির্বাচন স্থগিত করা হয়। এরপর নির্বাচন নিয়ে আর কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারেরও এই নির্বাচন নিয়ে কোনো চিন্তাভাবনা নেই বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকটি সূত্র বলছে, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা যাচাই-বাচাই করার উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্য মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞা পুনর্নির্ধারণ করে জামুকা অধ্যাদেশ তৈরি করা হচ্ছে। অধ্যাদেশটি চূড়ান্ত হওয়ার পরেই বড় পরিসরে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই শুরু করা হবে দেশজুড়ে। এই কাজে মাঠপর্যায়ে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত করা হবে মুক্তিযোদ্ধা সংসদকে।

বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গোলাম মুস্তাফা মুন্না বলেন, আমি মুক্তিযোদ্ধা সংসদকে সক্রিয় করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এই ভবনটি সম্মানীত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। তাদের জন্য ভবনের দরজা সবসময় খোলা। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের এই ভবন ব্যবহারের অনুরোধ জানান।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category