মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বড় কালীপুর-বাঘাইয়াকান্দি সড়কের বড় কালীপুর গ্রামসংলগ্ন খালের ওপর ব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা এবং বিল উত্তোলন করে প্রায় দুই বছরে ধরে নির্মাণ কাজ বন্ধ রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে করে ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী বড় কালীপুর, তনু সরকার কান্দি, এনএসকান্দি, বাঘাইয়াকান্দি গ্রামসহ এর আশপাশের গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ এখন ভোগান্তিতে পড়েছে।
গজারিয়ায় এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, বড় কালীপুর গ্রামসংলগ্ন খালের ওপর ৫৬ মিটার দীর্ঘ আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণে প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অর্থায়নে গার্ডার ব্রিজটি নির্মাণের কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টিএন অ্যান্ড এএসআই লিমিটেড নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। চুক্তি অনুযায়ী ব্রিজটির কাজ শুরু হয় ২০২১ সালে, যা শেষ করার কথা ছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে। এরই মধ্যে ব্রিজের পিলার নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক কিছু কাজ করে নির্মাণ সামগ্রীর মাত্রাতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধির ফলে কাজ বন্ধ করে ঠিকাদার এক কোটি ১৩ লাখ টাকা বিল তুলে নিয়ে যায়। এদিকে প্রায় দুই বছর ধরে নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এই ব্রিজ নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় তিন বছরে এই ৫৬ মিটার ব্রিজের দুই প্রান্তের অ্যাবাটমেন্ট চারটি পিলার নির্মাণ করে রাখা হয়েছে।
দীর্ঘদিনেও ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় খাল পারাপারের একমাত্র ভরসা একটি খেয়া নৌকা। এতে করে বিপাকে পড়েছেন পাঁচ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। শত শত বিঘা জমির উৎপাদিত ফসল ঠিক সময়ে বাজারজাত করতে না পারায় আর্থিক ক্ষতির মুখে স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। স্থানীয়রা জানান, আমাদের দীর্ঘদিনের দাবির মুখে বিগত সরকার এখানে একটি ব্রিজ করার পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী ঢাকঢোল পিটিয়ে কাজও শুরু করা হয়। অনেক আশা ছিল, ব্রিজটি নির্মাণ হলে এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়ন হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থায় গতি ফিরে আসবে। কিন্তু কাজ ফেলে মাঝপথে ঠিকাদার লাপাত্তা হওয়ায় এলাকার মানুষ উদ্বিগ্ন।
এ বিষয়ে গজারিয়া উপজেলা প্রকৌশলী সামিউল আরেফিন বলেন, এ পর্যন্ত আর সি সি গার্ডার ব্রিজটির ৬০ শতাংশ কাজ হয়েছে। ঠিকাদার কাজ বন্ধ করায় তাকে আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। দ্রুত ব্রিজটি নির্মাণে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছি নতুন করে টেন্ডার আহ্বান করা হবে। ব্রিজের বাকি কাজ নতুন ঠিকাদার দিয়ে করা হবে বলে জানান তিনি।