পেঁয়াজের রাজধানীখ্যাত মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলা। এখানে মৌসুমে বেশির ভাগ জমিতেই পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। তবে লাগামহীন পেঁয়াজ বীজের দামের কারণেই চলতি মৌসুমে শঙ্কায় রয়েছেন স্থানীয় পেঁয়াজ চাষিরা। প্রতি বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষে কৃষকদের গুনতে হচ্ছে লাখ টাকা। দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতির প্রভাব যেন বাজার ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে কৃষকের মাঠেও।
চলতি মৌসুমে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলায় ব্যাপক আকারে হয়েছে কন্দ পেঁয়াজের চাষ। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পেঁয়াজ চাষে অতিরিক্ত খরচ গুনতে হচ্ছে কৃষকদের। পেঁয়াজবীজ (গুটি পেয়াজ), শ্রমিক, সারসহ উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত সব পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় পেঁয়াজ চাষের খরচ প্রায় দ্বিগুণে পৌঁছেছে। এতসব খরচের মাঝেও লাভ করতে পারবে কিনা, সে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকরা। তবে পেঁয়াজ চাষে খরচ বাড়লেও বসে নেই চাষিরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নেই পুরোদমে চলছে পেঁয়াজের চাষাবাদ। সেই সঙ্গে হালি পেঁয়াজের বীজতলা পরিচর্যার কাজেও ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
উপজেলার চালা ইউনিয়নের লাউতা গ্রামের শহিদ নামের এক কৃষক জানান, এ বছর পেঁয়াজ চাষে খরচ অনেক বেড়ে গেছে। গত বছর প্রতি পাখি (বিঘা) জমিতে পেঁয়াজ চাষে খরচ হয়েছিল ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা, কিন্তু এ বছর খরচ ১ লাখ টাকারও বেশি হবে। এত টাকা খরচ করে পেঁয়াজ চাষ করে লাভবান হওয়া যাবে কিনা, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা থেকেই যায়।
উপজেলার বাল্লা ইউনিয়নের খেরুপাড়া গ্রামের কৃষক সাহজাহান বলেন, আমি এ বছর ৩ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছি। আমার প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকার মতো খরচ হবে। একই ইউনিয়নের শরফদিনগর গ্রামের কৃষক মুজিবুর মোল্লা জানান, এ বছর তিনি ৪ বিঘা জমিতে কন্দ পেঁয়াজ চাষ করেছেন। এবার গুটি পেঁয়াজই কিনতে হয়েছে ১৬ হাজার টাকা মণ দরে। সব খরচ মিলে প্রতি বিঘায় খরচ লাখ টাকার ওপরে। ফলন যদি ভালো না হয় এবং পেঁয়াজের বাজার ৪ হাজার টাকা মণের নিচে নেমে গেলে নিশ্চিত লস হবে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে হরিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌহিদুজ্জামান খান বলেন, এ বছর পেঁয়াজের উৎপাদন খরচ বেশি হলেও কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছেন। যে কারণে পেঁয়াজ চাষিদের লোকসানের সম্ভাবনা কম। এ বছর পেঁয়াজের ফলন গত বছরের তুলনায় ভালো হবে বলে আশা করছি।
